বর্ষা পাসোয়ান। নিজস্ব চিত্র
ক্লাসে উপস্থিতির হার ৯৫ শতাংশ। পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ওঠার পরীক্ষায় ভাল ভাবেই উতরে যাবে, সে কথা মা’কে বলেও ছিল রানিগঞ্জের জেকে নগর জুনিয়র হাইস্কুলের পড়ুয়া বর্ষা পাসোয়ান (১১)। শুক্রবার পরীক্ষায় ফলপ্রকাশের ঠিক আগের রাতেই বর্ষার খুন হওয়ার ঘটনায় শোকগ্রস্ত গোটা স্কুল।
এ দিন ফলপ্রকাশ হওয়ার পরেই স্কুলে বর্ষার স্মরণে শোকপালন হয়। ছুটিও হয়ে যায় স্কুল। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (টিচার ইনচার্জ) রাজশ্রী সিংহের বক্তব্য, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনা। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ বর্ষার ক্লাস টিচার অর্জুন সিংহ বলেন, ‘‘ক্লাসে বর্ষার উপস্থিতির হার ছিল ৯৫ শতাংশ। বাড়ির আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। কিন্তু সেই বাধা পেরিয়েও বর্ষা পড়াশোনায় মনোযোগী ছিল। সবসময়, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কথা বলত।’’
স্কুল সূত্রে জানা যায়, এ দিন ফলপ্রকাশের পরে দেখা যায়, বর্ষা বার্ষিক পরীক্ষায় ৪৬.৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। বর্ষার সহপাঠী রিয়া ভগত ও রুকসানা খাতুনদেরও মনখারাপ। তারা জানায়, ক্লাসে এসেই দ্বিতীয় লাইনে বসত বর্ষা। সবার সঙ্গেই অত্যন্ত ভাল সম্পর্ক ছিল।
বর্ষার বাবা বিজয়বাবু জামুড়িয়ার একটি বেসরকারি কারখানার কর্মী। পরীক্ষার ফল শুনে মা রেখাদেবী বলেন, ‘‘ও বলেছিল, পরীক্ষায় ভাল ভাবেই পাশ করবে। মেয়ে বড় হয়ে চাকরি করতে চাইত।’’ বর্ষারা দু’ভাই ও এক বোন। তার বড় দাদা রাহুল বলেন, ‘‘ফি বছর আমাদের দু’ভাইকে রাখি বাঁধত ও। এ বার আর কেউ রাখি বাঁধার রইল না।’’