রাস্তা আটকে পোড়ানো হচ্ছে বাজি। বর্ধমানের বিসি রোডে। নিজস্ব চিত্র।
সদর শহরে খানিক কমলো উৎপাত। কিন্তু জেলার অন্য নানা এলাকায় কালীপুজোর রাতে এ বারও দাপাল শব্দবাজি।
গত কয়েক দিন ধরে নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করতে অভিযান চালিয়েছে জেলা পুলিশ। বহু বাজি উদ্ধারও হয়েছে। চালানো হয়েছে সচেতনতার প্রচার। বর্ধমান শহরে তারই ফল মিলেছে বলে মনে করছেন পুলিশকর্তা থেকে বাসিন্দারা। কিন্তু কালনা, কাটোয়া-সহ জেলার নানা প্রান্তে জোরালো আওয়াজের বাজির উপদ্রব থেকে রেহাই মেলেনি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমানের ভাতছালা, রসিকপুর, তেলিপুকুর-সহ কিছু জায়গায় শব্দবাজির আওয়াজ শোনা যায়। তবে তার মাত্রা অন্য নানা বছরের থেকে কম ছিল বলে দাবি এলাকাবাসীর। শহর জুড়ে সামগ্রিক ভাবে শব্দবাজি মাত্রা ছা়ড়ায়নি বলেও জানান তাঁরা। কাঞ্চননগরের ব্যবসায়ী পার্থপ্রতিম ঘোষ বলেন, ‘‘প্রতি বারই ভয়ে থাকি, কানফাটা আওয়াজের। এ বারও ছিলাম। তবে সেই উৎপাত সহ্য করতে হয়নি।’’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম এস পুষ্পা বলেন, ‘‘আমরা নিয়মমাফিক অভিযান ও সচেতনতার প্রচার চালিয়েছি। তবে শব্দবাজি কম ফাটার কৃতিত্ব সাধারণ মানুষের। এর ক্ষতি তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, সে জন্যই সচেতন হয়েছেন।’’ কিছু ক্লাবের দাবি, পুজো মণ্ডপে তাঁরাও নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছেন। আরএইউসি ক্লাবের সদস্য শুভজিৎ দত্ত, সৌমিত্র রায়েরা বলেন, ‘‘আমরা প্রচার চালিয়েছি। নিজেরাও বাজি পোড়াইনি। সকলে সচেতন হলেই নিস্তার মিলবে।’’
তবে পুজোর সন্ধে থেকে শহরের নানা জায়গায় রাস্তা আটকে বাজি পোড়াতে দেখা যায় কিছু যুবককে। এর জেরে বিসি রোড, আরডি ঘোষ রোড, জেলখানা মোড়, বিবি ঘোষ রোডের নানা জায়গায় বিপাকে পড়েন পথচারীরা। ওই যুবকদের অবশ্য দাবি, পথচারীদের অসুবিধায় না ফেলেই তাঁরা রাস্তায় আতসবাজি পুড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালনা শহরের নতুন ও পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকা, ভাগীরথীর লাগোয়া এলাকাগুলিতে শব্দবাজির রীতিমতো দৌরাত্ম্য ছিল বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। বাঘনাপড়া, সুলতানপুর-সহ নানা গ্রামীণ এলাকাতেও দেদার বাজি ফেটেছে। এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘প্রচুর শব্দবাজি ফেটেছে, এমন অভিযোগ আমরা পাইনি। তবে রাতে মহকুমা জুড়ে অভিযান চালিয়ে অনেক বেআইনি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।’’
কাটোয়ায় রাত বাড়তেই চকোলেট বোমা, কালীপটকার দাপট শুরু হয় বলে বাসিন্দারা জানান। গৌরাঙ্গপাড়া, নিচুবাজার, গোয়ালপাড়া এলাকায় রাতে পুজোর আগে বিকট শব্দে বাজি ফাটতে শুরু করে। মাধবীতলা, টেলিফোন ময়দান, সুবোধ স্মৃতি রোডেও বেশ দাপট ছিল শব্দবাজি। মাধবীতলার বাসিন্দা বাসবী বন্দোপাধ্যায়, ফাল্গুনী সাহাদের অভিযোগ, ‘‘বাজির আওয়াজে চমকে-চমকে উঠছিলাম। ঘুমোতে পারিনি।’’ পুলিশ অবশ্য জানায়, শব্দবাজি নিয়ে কোনও অভিযোগ হয়নি। মহকুমাশাসক (কাটোয়া) সৌমেন পালেরও বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেব।’’