চোর সন্দেহে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল গ্রামেরই কয়েকজনের বিরুদ্ধে। তার পরেই বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তাঁকে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সপ্তাহখানেক চিকিৎসাধীন থাকার পরে বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত্যু হল ভাতারের রাধানগর গ্রামের শেখ আকবরের (৩২)। মারধরের ঘটনার পর দিনই আকবরের স্ত্রী রসুলা বিবি ভাতার থানায় সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। পুলিশ জানায়, ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তেরা গ্রামছাড়া। তাদের খোঁজ চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় দিনমজুর শেখ আকবরের বাড়িতে বিধবা মা, স্ত্রী ও তিন নাবালক সন্তান রয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি আকবরের পড়শি রাজা শেখের বাড়ি থেকে চার হাজার টাকা চুরি যায় বলে অভিযোগ। পড়শিদের সন্দেহ হয়, আকবরই সেই টাকা চুরি করেছেন। সে রাতেই এক দল প্রতিবেশী আকবরের খোঁজে বাড়িতে আসে। তাঁকে না পেয়ে ফের পর দিন সকালে সদলবলে আসে তারা। অভিযোগ, আকবরকে বাড়ি থেকে ডেকে গ্রামেরই একটি মোড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে মারধর করা হয় তাঁকে।
মৃতের মা গুলবাহার বিবি জানান, চুরির সঙ্গে আকবর যুক্ত নয়, এ কথা বারবার বলা হলেও টানতে-টানতে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর ছেলেকে। আকবরের স্ত্রী রসুলা বিবির কথায়, ‘‘কয়েক জনের মধ্যস্থতায় স্বামীকে ওদের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনি। তার কিছুক্ষণ পরে প্রতিবেশীরা এসে ভুল স্বীকারও করে। কিন্তু ওরা চলে যেতেই ঘরের ভিতরে বাঁশের কাঠামোয় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আমার স্বামী।’’ সে দিন দুপুরেই বর্ধমানে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় আকবরকে। বৃহস্পতিবার ভোরে মৃত্যু হয় তাঁর।
মৃতের আত্মীয় মেহেবুবু শেখের অভিযোগ, ‘‘স্রেফ সন্দেহের বশে এক যুবককে মারধর করা হল। লজ্জায় আত্মঘাতী হলেন তিনি। পরিবারটির এখন কী হবে, কারও জানা নেই!’’ মৃতের পরিজনেরা অভিযুক্তদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি তুলেছেন। ভাতার থানার পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। তল্লাশি চলছে।