গতির ধুমে লাগাম টানতে রাজ্য প্রশাসন ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ কর্মসূচি শুরু করেছে। হেলমেট মাথায় না থাকলে পাম্প থেকে তেল না দেওয়া বা চকোলেট-মিষ্টিমুখ করিয়ে সচেতনতা প্রচার, সবই হয়েছে রাজ্যের নানা প্রান্তে। তার পরেও হুঁশ যে ফেরেনি, তা ফের বোঝা গেল পশ্চিম বর্ধমানে। শনিবার, এক দিনে দু’টি পৃথক জায়গায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিন জন মোটরবাইক আরোহীর। দু’টি ক্ষেত্রেই তাঁদের মাথায় হেলমেট ছিল না, দাবি পুলিশের। পুজোর আগে গতি-নিয়ন্ত্রণে পুলিশি নজরদারি বাড়ানোরও দাবি উঠেছে।
প্রথম ঘটনাটি ঘটে শনিবার সন্ধ্যায়। ঘটনাস্থল, মুচিপাড়া-শিবপুর রাস্তার সরস্বতীগঞ্জ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় মলানদিঘির বাসিন্দা মানস মান (৪০) শিবপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরও এক আরোহী। পুলিশ জানায়, মোটরবাইকের গতি ছিল লাগামছাড়া। আর তার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মানসবাবু রাস্তা লাগোয়া একটি গাছে ধাক্কা মারেন। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যান দু’জনেই। তাঁদের উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ ও স্থানীয়রা। সেখানে মানসবাবুকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা। অন্য জন চিকিৎসাধীন।
অন্য ঘটনাটি ঘটে রাত ১০টা নাগাদ, জিটি রোডের উপরে আসানসোলের মুর্গাসোলে। পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে রানিগঞ্জ থেকে আসানসোলের দিকে আসছিলেন সোনু রাউত (১৮) ও সিকন্দর ভুঁইয়া (১৯) নামে দুই তরুণ। দু’জনের বাড়িই আসানসোলের দিলদারনগরে। মুর্গাসোল লাগোয়া এলাকায় উল্টো দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে মোটরবাইকের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁদের। রবিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহ দু’টির ময়না-তদন্ত হয়েছে। পুলিশ জানায়, ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। চালক ও খালাসি পলাতক।
বাসিন্দাদের দাবি, পুজোর মরসুমে এমন বেপরোয়া গতির ধুম বিপদ বাড়াচ্ছে জেলায়। শুধু তাই নয়, ফি দিন রাতে জিটি রোড, এসবি গড়াই রোড ও বার্নপুর রোডে এক দল মোটরবাইক চালক ‘গতির প্রতিযোগিতা’তেও নামছেন বলে পুলিশে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। তাঁদের আরও অভিযোগ, উপযুক্ত নজরদারির অভাবেই এই ধরনের দুর্ঘটনা বাড়ছে।
পুলিশের আশ্বাস, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।