BJP

আতঙ্ক নিয়েই ছন্দে বারাবনি, ধৃত চার

ঘটনার দিনেই বারাবনি থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘হামলা’র অভিযোগ করে বিজেপি, তৃণমূল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বারাবনি শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ০০:১৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষে শনিবার তেতে উঠেছিল বারাবনি। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ছন্দে ফিরল বারাবনির ৪ নম্বর খরাবর এলাকার জনজীবন। দোকানপাট খোলা। লোকজন বাড়ির বাইরেও বেরিয়েছেন। তবে, চাপা আতঙ্কও দেখা গিয়েছে। রবিবার রাত পর্যন্ত দু’পক্ষের মোট চার জনকে গ্রেফতার করার কথা জানিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট।

Advertisement

ঘটনার দিনেই বারাবনি থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে ‘হামলা’র অভিযোগ করে বিজেপি, তৃণমূল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন আর নতুন করে কোনও অশান্তি ছড়ায়নি এলাকায়। তবে রাজনৈতিক তরজা, উত্তাপ এ দিনও বজায় ছিল পুরো মাত্রায়।

যেখানে ঘটনা ঘটেছিল, সেখানে ফের ‘শান্তিপূর্ণ’ মিছিল করা হবে বলে জানিয়েছেন বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই। পাল্টা মিছিল করার কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ। তবে, মিছিল দু’টি কবে হবে, তা নিয়ে কোনও পক্ষই নির্দিষ্ট করে কিছু জানায়নি।

Advertisement

এ দিকে, রবিবার বিকেলে ‘আর নয় অন্যায়’ শীর্ষক কর্মসূচি উপলক্ষে আসানসোলের গির্জামোড় থেকে একটি মিছিল করে বিজেপি। সেখানে যোগ দেন বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বহিরাগত দুষ্কৃতীদের দিয়ে আমাদের দলের কর্মী, সদস্যদের উপরে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। সংবিধান আমাদের উপরে আঘাত হানলে তা প্রতিহত করার অধিকার দিয়েছে। আমরা সেই অধিকারের প্রয়োগ করব।’’ তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি দাবি করেছেন, ‘‘দুষ্কৃতী ও বহিরাগতদের নিয়ে ঘোরাফেরা করে বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্ব প্রতি মুহূর্তে নানা ধরনের উস্কানি দিয়ে এলাকা-সহ গোটা রাজ্যেই অশান্তি তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন।’’

পাশাপাশি, পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎ মাহাতা জানান, ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার রাত পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। তবে, এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী এ দিন নাম প্রকাশ করতে চাননি। তবে তাঁরা জানান, এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি।

শনিবারের ওই ঘটনায় কালীচরণ দাস নামে এক বিজেপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হন এবং তৃণমূল ও বিজেপির মোট পাঁচ জন জখম হয়েছিলেন বলে দাবি। জখমদের অবস্থা স্থিতিশীল, জানান ডাক্তারেরা। কালীচরণবাবুকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ওই হাসপাতালের ডেপুটি সুপার দেবাশিস ঘোষ বলেন, ‘‘জখম ব্যক্তির অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল। আইসিইউ-তে ভর্তি আছেন। ফুসফুসে জমে থাকা রক্ত বার করা হচ্ছে। সব ঠিক থাকলে, আজ, সোমবার তাঁর অস্ত্রোপচার করা হবে।’’

ঘটনাচক্রে, শনিবার কালীচরণবাবুকে দেখতে এসে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলায় বিজয়বর্গীয়। তবে, রবিবার বিজেপি নেতা রাজুবাবু বলেন, ‘‘আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে শহিদ হতে দিতে চাই না। কারণ, কিছুদিন পরে তৃণমূল এমনিই শ্মশানে যাচ্ছে। তবে বাংলার মানুষ যদি আওয়াজ তোলেন যে, তাঁরা রাষ্ট্রপতি শাসন চান, তাহলে তাঁদের সঙ্গে আমরা থাকব।’’ তৃণমূলের জেলা নেতা উত্তম মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মানুষ যে বিজেপির পাশে নেই তা বোঝা যাচ্ছে ওঁদের নেতাদের আচরণে। যে যা পারছেন বলছেন। কিন্তু মানুষ শুনছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন