প্রতীকী ছবি।
‘দুয়ারে ভাইফোঁটা’, শনিবার দুর্গাপুরে এমনই কর্মসূচি নিলেন যুব তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা। এ দিকে, বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালও আদিবাসীদের ভাইফোঁটা দিয়েছেন হিরাপুরের বড়ডাঙা গ্রামে। দুই ঘটনাকে দেখে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আদতে দু’দলই জন-সংযোগও ঝালিয়ে নিতে চাইল। যদিও কোনও পক্ষই তা স্বীকার করেনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুর্গাপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় পাঁচশো জনকে ফোঁটা দেন যুব তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা। এ দিন সকাল থেকেই দেখা যায়, ওই কর্মীদের ব্যস্ততা ও প্রস্তুতির ছবি। তাঁরা রেকাবিতে ধান, দূর্বা, চন্দন নিয়ে বেরিয়ে পড়েন এলাকায়। রাস্তা দিয়ে যাওয়া প্রত্যেক
‘দাদা ও ভাই’দের ফোঁটা দিয়ে মঙ্গল কামনা করেন তাঁরা। ছিল মিষ্টিমুখের ব্যবস্থাও। এ ভাবে ভাইফোঁটা পেয়ে খুশি মোটরবাইক চালক বিপ্লব দত্ত। তিনি বলেন, “আমাকে ফোঁটা দেওয়ার আবদার জানান ওঁরা। আমি তো অবাক! এ ভাবে দিদি-বোনদের শুভেচ্ছা পাব, ভাবিনি।” তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই কর্মসূচির মূল উদ্যোক্তা ছিলেন, যুব তৃণমূল নেতা তথা ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর পল্লবরঞ্জন নাগ। তিনি বলেন, “আমাদের সংগঠনের মহিলা কর্মীরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেন, সবাইকে ফোঁটা দেওয়া হবে। আমরা সহযোগিতা করি।” এই কর্মসূচি কি জন-সংযোগ ঝালিয়ে নিতেই? ‘‘একেবারেই না, এ শুধুই শুভেচ্ছা বিনিময়”, প্রতিক্রিয়া পল্লবরঞ্জনের। একই প্রতিক্রিয়া যুব তৃণমূল কর্মী কাজি নাজিয়া বেগমেরও। পাশাপাশি, ফোঁটা দিতে-দিতেই তাঁর সংযোজন: “সারা রাজ্যের সব ভাইদের মঙ্গল কামনায় আমরা দুয়ারে ভাইফোঁটা কর্মসূচির আয়োজন করেছি। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় পথচারী, রিকশা চালক, বাইক-গাড়ি চালক, রাস্তার ধারের বাড়ির দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা দাদা ও ভাইদের আমরা ফোঁটা দিয়েছি।”
এ দিকে, শনিবার আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল আসানসোল পুরসভার ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডের বড়ডাঙা আদিবাসী গ্রামে ভাইফোঁটা দিলেন। স্থানীয় বাসিন্দা ছোটলাল হেমব্রম, ফুলমণি হাঁসদারা বলেন, “বিধায়ক এলাকার ছেলেদের ভাইফোঁটা দিয়েছেন। পাশাপাশি, শুনেছেন এলাকার সমস্যার কথাও।” এ-ও কি জন-সংযোগের নতুন কৌশল? প্রশ্ন করতেই অগ্নিমিত্রা অবশ্য বলেন, “জনসংযোগ নয়, কিছু দিন আগে বন্যার সময়েও ওঁদের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম। ভাইফোঁটার আগে মনে হল, ওঁদের সঙ্গে একটু আনন্দ ভাগ করে নেওয়া উচিত। প্রতি বার পরিবারের সঙ্গে অথবা দলীয় কর্মসূচিতে দিনটা কাটাই। এ বার এখানে আসতে পেরে ভীষণ ভাল লেগেছে।” গ্রামবাসী মলিন্দ হেমব্রম, সোনামণি হেমব্রম বলেন, “আমাদের মধ্যে ভাইফোঁটার প্রচলন নেই। আমরা খুব খুশি। বিধায়ককে বাঁধনা পরবে আসার জন্য আহ্বান
জানিয়েছি আমরা।”