ক্ষোভে রাশ টানাই চ্যালেঞ্জ

পূর্ব বর্ধমানের ২১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র ২১টিতে এখন বোর্ড গঠনের কাজ চলছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২৫
Share:

ঘটনা ১: পূর্বস্থলীর মেরতলা পঞ্চায়েতে দলের ‘হুইপ’ অগ্রাহ্য করে প্রধান হন প্রাক্তন বিধায়কের এক অনুগামী। সভায় হাজির দলের নেতারা দেখেন, সদ্য নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্যেরা নির্দেশ অগ্রাহ্য করছে।

Advertisement

ঘটনা ২: দুই নেতার দ্বন্দ্ব যাতে মাথাচাড়া না দেয়, সে জন্য মেমারি ২ ব্লকের সাতগেছিয়া ২ পঞ্চায়েতে প্রধান ও উপপ্রধানের নাম ঠিক করে দিয়েছিলেন দলের নেতৃত্ব। কিন্তু তা অগ্রাহ্য করে বোর্ড গঠনের দিন ভোটাভুটি হয়। সেখানেও ফয়সালা না হওয়ায় ব্লক প্রশাসনকে টস করে প্রধান ও উপপ্রধান ঠিক করতে হয়।

পূর্ব বর্ধমানের ২১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে মাত্র ২১টিতে এখন বোর্ড গঠনের কাজ চলছে। তার মধ্যেই দু’টিতে দলের নির্দেশ অগ্রাহ্য করার মতো ঘটনা ঘটায় তৃণমূল নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থীদের বিষয়ে দু’এক দিনের মধ্যে কলকাতা গেজেট প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। তা হয়ে গেলেই তিন সপ্তাহের মধ্যে বাকি পঞ্চায়েত ও ২৩টি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন করতে হবে। তখন কী ভাবে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও ভোটাভুটি এড়িয়ে প্রধান ও উপপ্রধানের নাম ঘোষণা করা যাবে, তা নিয়ে চিন্তায় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। যদিও জেলা নেতাদের অনেকের দাবি, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, ভুল বোঝাবুঝির জন্য ওই দু’টি ঘটনা ঘটেছে। পরে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না বলে তাঁদের আশা।

Advertisement

জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক সুশান্তকুমার ভক্ত বলেন, ‘‘রাজ্যের কাছে সমস্ত তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, দু’এক দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশ হয়ে যাবে। তা হওয়ার ২১ দিনের মধ্যে বোর্ড গঠন করা নিয়ম।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গেজেট প্রকাশের পরেই কোন ব্লকে কবে বোর্ড গঠন করা হবে, তার নির্দেশিকা জারি করবেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত)। বোর্ড গঠনের সময়ে ব্লক প্রশাসনের দু’জন করে আধিকারিকের উপস্থিত বাধ্যতামূলক করতে চাইছে প্রশাসন। পাশপাশি সে দিন পর্যাপ্ত পুলিশি ব্যবস্থা রাখার দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।

দল কী ভাবে কোন্দলে রাশ টানবে? তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ সোমবার বলেন, ‘‘দলীয় পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে আমরা ঠিক করেছি, বিধায়ক, ব্লক পর্যবেক্ষক ও ব্লক সভাপতি আলোচনা করে দলের কাছে প্রধান ও উপপ্রধানের নাম দেবেন। একই রকম ভাবে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতির নামও তাঁরা জানাবেন। যৌথ আলোচনায় যে নাম উঠে আসবে, তাঁকেই আমরা পদাধিকারী ঘোষণা করব।’’ জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের বক্তব্য, ‘‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই পদাধিকারীদের নাম উঠে আসবে।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠনের সময়ে দলের এক জন করে নেতাকে পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হবে। যৌথভাবে উঠে আসা পদাধিকারীদের নাম মুখবন্ধ খামে পাঠানো হবে। এ ভাবেই বোর্ড গঠনে অস্বস্তি দূর করা যাবে, আশায় তৃণমূল নেতারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement