Bhupendra Yadav

আরাবল্লি পাহাড়ে খনন নিয়ে শীর্ষ আদালতের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা হচ্ছে, দাবি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

সম্প্রতি সুপ্রিম রায়ে বলা হয়েছে, আরাবল্লি পাহাড়ের ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূমি ও আশপাশের ঢাল, সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। যার অর্থ ১০০ মিটারের কম পাহাড়গুলি সংরক্ষণের আওতায় থাকবে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ২২:৪০
Share:

সুন্দরবনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। — নিজস্ব চিত্র।

আরাবল্লি পাহাড়ে খননকার্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার দেশের প্রাচীনতম পর্বতমালা আরাবল্লির সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর।’’

Advertisement

সম্প্রতি সুপ্রিম রায়ে বলা হয়েছে, আরাবল্লি পাহাড়ের ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূমি ও আশপাশের ঢাল, সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। যার অর্থ, ১০০ মিটারের কম পাহাড়গুলি সংরক্ষণের আওতায় থাকবে না। অথচ আরাবল্লির ৯০ শতাংশ পাহাড়ের উচ্চতা ১০০ মিটারের নিচে। এর পরেই রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তকে লেখা চিঠিতে পাহাড়ের উচ্চতা-ভিত্তিক সংরক্ষণের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান পরিবেশ কর্মী হিতেন্দ্র গান্ধী। তাঁর বক্তব্য, আরাবল্লির উচ্চতা-ভিত্তিক মানদণ্ড উত্তর-পশ্চিম ভারতের পরিবেশের সুরক্ষাকে দুর্বল করে দেবে।

কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র অবশ্য জানিয়েছেন, আরাবল্লি সুরক্ষিত থাকবে। এর আগে রবিবার তাঁর মন্ত্রক জানিয়েছিল আরাবল্লির ৯০ শতাংশই ‘সংরক্ষিত অঞ্চল’ করে রাখা হবে। যদিও পরিবেশপ্রেমীদের অনেকেই তাতে আশ্বস্ত নন। তাঁদের অভিযোগ, আরাবল্লি পর্বতমালা খনিজ সম্পদে ভরা। স্যান্ডস্টোন, লাইমস্টোন, গ্রানাইট, মার্বেল পাথরের বিপুল ভান্ডার রয়েছে সেখানে। এ ছাড়াও তামা, দস্তা, সীসার মতো খনিজে সমৃদ্ধ এই পাহাড়। রয়েছে দামি পাথরের সম্ভারও। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার সে দিকে ‘নজর’ রয়েছে। ভূপেন্দ্র অবশ্য বলেছেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট ভাবে বলেছে যে দিল্লি, গুজরাত এবং রাজস্থানের আরাবল্লি পর্বতমালাকে বৈজ্ঞানিক মূল্যায়নের মাধ্যমে সংরক্ষণ করা উচিত।’’

Advertisement

দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং গুজরাতের মধ্য দিয়ে প্রায় ৬৯২ কিলোমিটার এলাকা জু়ড়ে বিস্তৃত প্রাচীন পাহা়ড়শ্রেণি আরাবল্লি

গত ২০০ কোটি বছর ধরে উত্তর ভারতের অন্যতম ঢাল হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। থর মরুভূমি থেকে উড়ে আসা বালি এবং ধূলিকণাকে রুখে দেয় এই অনুচ্চ পাহাড়গুলি। দিল্লির বায়ুদূষণ কমাতেও সাহায্য করে। সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের ৩৭টি জেলার জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের প্রয়োজনীয় জ্বালানি কাঠ, পশুখাদ্য, ভেষজ গাছ আসে আরাবল্লির বনভূমি থেকে। কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে খননের অনুমতি দিলে অরণ্যবাসী জনজাতিরা বঞ্চিত হবেন বলে তাঁদের অভিযোগ।

আরাবল্লিতে অবৈধ খনির দীর্ঘমেয়াদি মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্ট ২০২৪ সালের মে মাসে পাহাড়শ্রেণির ‘অভিন্ন সংজ্ঞা’ সুপারিশ করার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছিল। কারণ, খনির অনুমতি দেওয়ার সময় বিভিন্ন রাজ্য অসঙ্গতিপূর্ণ মানদণ্ড অনুসরণ করছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। এর পর সম্প্রতি আরাবল্লি নিয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রকের প্রস্তাবিত সংজ্ঞায় বলা হয়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে নয়, বরং আশপাশের এলাকার চেয়ে ১০০ মিটার বা তার বেশি উচ্চতার ভূখণ্ডই কেবলমাত্র আরাবল্লি পাহাড় বলে গণ্য হবে। কমিটির রিপোর্ট এবং কেন্দ্রের মতামতের ভিত্তিতেই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement