অনুষ্ঠানে শিল্পী চেয়ে বিতর্কে সাংসদ সুনীল

সরকারের ওই দফতরের কর্তারা তো বটেই, দলের নেতাদেরও দাবি, সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে এ ভাবে শিল্পী পাঠানো যায় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৩
Share:

বিতর্কে জড়ালেন তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল। —ফাইল ছবি

কার্তিক পুজোর থিম, ‘দিদিকে বলো’। উদ্যোক্তা, ‘জয় হিন্দ, জয় বাংলা’ নামে একটি সংগঠন। ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’, কাটোয়া শহর তৃণমূল সভাপতি তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান অমর রাম। এই পুজোর অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরকে বাউল শিল্পী পাঠাতে বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল।

Advertisement

সরকারের ওই দফতরের কর্তারা তো বটেই, দলের নেতাদেরও দাবি, সরকারি অনুষ্ঠান ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে এ ভাবে শিল্পী পাঠানো যায় না।

অস্বস্তিতে পড়ে সাসংদের বক্তব্য, ‘‘উদ্যোক্তাদের সঙ্গে স্থানীয় বিধায়কের ভাব নেই। সে জন্য আমায় চিঠি করতে হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমি তো কোনও নির্দেশ দিইনি। ওই চিঠিতে বলেছি, সরকারি কাঠামোয় যদি সম্ভব হয়। অনুরোধ জানিয়েছি।’’

Advertisement

তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সূত্রে জানা যায়, সরকারের কোনও অনুষ্ঠান হলে শিল্পীদের সাম্মানিক ভাতা, রাহা খরচ সংশ্লিষ্ট দফতর বহন করে। আর সামাজিক কোনও অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট সংস্থা শিল্পীদের যাতায়াত, খাওয়া খরচ দেয়। সাম্মানিক ভাতা দেয় তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। সাংসদের চিঠি অনুযায়ী, ‘মঙ্গলবার কাটোয়ার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাধুরীতলায় (হবে মাধবীতলা) সন্ধে সাড়ে ৫টায় তৃণমূলের উদ্যোগে দফতরের সামনে বাউল অনুষ্ঠান হবে। ওই অনুষ্ঠানে উন্নয়নমূলক বিষয়গুলি তুলে ধরার জন্য বাউল শিল্পীদের পাঠানোর অনুরোধ করা হচ্ছে।’ এ ব্যাপারে সহযোগিতা ও সমর্থন করে ওই কর্মসূচিকে সফল করার জন্যও দাবি করা হয়েছে। যদিও ওই দফতরের জেলা আধিকারিক কুশল চক্রবর্তীর স্পষ্ট বক্তব্য, “সরকারি অনুষ্ঠান বা সামাজিক অনুষ্ঠান ছাড়া আমরা শিল্পী পাঠাই না।’’

কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় ও অমর রামের ‘দ্বন্দ্ব’ বহু পুরনো। ‘বিধায়কের সঙ্গে ভাব নেই’ বলে তাতে একপ্রকার সিলমোহর দিয়েছেন সাংসদও। যদিও বিধায়ক তথা কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সে দিকে ঘেঁষতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘সাংসদের চিঠির বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে সরকারি বা সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য শিল্পী চেয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়।’’ একই দাবি করেছেন বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (বর্ধমান দক্ষিণ), নার্গিস বেগম (‌মেমারি), নিশীথ মালিক (বর্ধমান উত্তর), নবীন বাগেরা (খণ্ডঘোষ)। প্রত্যেকেই জানান, দলীয় অনুষ্ঠান বা কর্মসূচির জন্য তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর থেকে শিল্পী চেয়ে আবেদন জানানো হয় না।

যদিও এর মধ্যে কোনও ‘অন্যায়’ দেখছেন না অমরবাবু। তিনি বলেন, “কার্তিক পুজোয় প্রচুর মানুষ শহরে আসেন। সে সময় বাউল শিল্পীরা গান করে সরকারের নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরুন, এটাই আমরা চাই। এর মধ্যে কোনও বিতর্ক খোঁজা উচিত নয়।’’ তাঁর টিপ্পনী, ‘‘আসলে যাঁরা কাজ না করে খুঁত ধরে বেড়ান, তাঁরাই বিতর্ক খুঁজছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন