নিয়োগ নিয়ে গোলমালের পরে পুড়ল তৃণমূল অফিস

কারখানায় নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দিনভর গোলমালের পরে রাতে লাগোয়া এলাকায় আগুনে পুড়ল তৃণমূলের অফিস। দুর্গাপুরের সগড়ভাঙায় সোমবার যে শাসকদলের যে গোষ্ঠীর লোকজন আন্দোলন করেন, দলের অন্দরে তাঁদের বিরোধী বলে পরিচিত গোষ্ঠীর অফিস ভস্মীভূত হয় রাতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৭ ০১:২২
Share:

ভস্মীভূত অফিস। —নিজস্ব চিত্র।

কারখানায় নিয়োগ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে দিনভর গোলমালের পরে রাতে লাগোয়া এলাকায় আগুনে পুড়ল তৃণমূলের অফিস। দুর্গাপুরের সগড়ভাঙায় সোমবার যে শাসকদলের যে গোষ্ঠীর লোকজন আন্দোলন করেন, দলের অন্দরে তাঁদের বিরোধী বলে পরিচিত গোষ্ঠীর অফিস ভস্মীভূত হয় রাতে। যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

শহরের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের সগড়ভাঙায় একটি বেসরকারি গ্রাফাইট কারখানায় ঠিকা শ্রমিক নিয়োগকে কেন্দ্র করে অশান্তি বাধে সোমবার। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ভীমসেন মণ্ডলের অনুগামীরা গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করেন। ফলে, মুচিপাড়া থেকে দুর্গাপুর স্টেশনগামী গাড়িগুলি আটকে পড়ে। পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে। বিক্ষোভকারীরা দলেরই অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নিয়োগে স্বজনপোষণ ও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। এর পরে সোমবার গভীর রাতে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোপীনাথপুরের চড়কতলায় তৃণমূলের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। সেটি এলাকার প্রথম দলীয় কার্যালয়। উদ্বোধন করেছিলেন দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি সুনীল চট্টোপাধ্যায়।

ওই এলাকার তৃণমূল কর্মী শঙ্কর সিংহ জানান, রাত ১টা নাগাদ পাড়ার লোকজনের কাছে তাঁরা অফিসে আগুন লাগার খবর পান। তড়িঘড়ি ছুটে গিয়ে নেভানোর কাজ শুরু করেন। যতক্ষণে আগুন নেভে, ভিতরের সমস্ত সামগ্রী, চালের কাঠামো পুড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ এসে সব দেখে গিয়েছে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে পুলিশ তদন্ত করে বের করুক।’’ আগুন লাগার পিছনে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্ভাবনা অবশ্য উড়িয়ে দেন সুনীলবাবু। এই এলাকায় তাঁদের কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই দাবি করে তাঁর অভিযোগ, ‘‘সিপিএম এবং বিজেপি-র লোকজন এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’’ যদিও সিপিএম এবং বিজেপি নেতৃত্ব এর সঙ্গে তাদের কোনও যোগের কথা মানতে চাননি। ভীমসেনবাবুরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের কেউ এর সঙ্গে জড়িত নয়।’’

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সগড়ভাঙা ও আশপাশের এলাকায় তৃণমূলের বর্তমান ও প্রাক্তন ব্লক সভাপতির অনুগামীদের মধ্যে মাঝে-মধ্যেই গোলমাল বাধে। এক পক্ষ মিছিল করলে অপর পক্ষও অন্য কোনও কর্মসূচি নিয়ে থাকে। ব্যানার-পোস্টার ছেঁড়া, বিরোধী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে থাকা কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগও উঠেছে এর আগে। ফেব্রুয়ারিতে রাজ্যের মন্ত্রী তথা দলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করার নির্দেশ দিয়ে যান। কিন্তু তার কিছু দিন পরেই এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে সুনীলবাবুর স্ত্রী তথা পুরসভার বরো চেয়ারপার্সন শেফালিদেবী ও তাঁর ছেলেকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। যদিও কোন্দলের কথা বরাবরই অস্বীকার করেন তৃণমূল নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন