একসঙ্গে বসে খাওয়াদাওয়া, কালনার গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।
তফসিলি জাতি ও জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার নানা সমস্যার খোঁজ নিতে ‘জহর থেকে জাহার’ নামে পদযাত্রা শুরু করেছে তৃণমূল। সপ্তাহখানেকের এই পদযাত্রায় যোগ দিয়েছে দলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু। আদিবাসী এলাকাগুলিতে মানুষজন এই কর্মসূচিতে স্থানীয় নানা সমস্যার কথা জানাচ্ছেন। দেবুবাবুর দাবি, ঘটনাস্থল থেকে সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে অনেক সমস্যা মেটানোর ব্যবস্থা করেছেন।
২৪ নভেম্বর আউশগ্রামের সাহেবডাঙা গ্রাম থেকে শুরু হয়েছে এই কর্মসূচি। আজ, ৩০ নভেম্বর জামালপুরের নবগ্রামে শেষ হবে এই কর্মসূচি। জেলার প্রায় ১০০ আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম ছুঁয়ে যাওয়ার লক্ষ্য রয়েছে পদযাত্রায়। রবিবার কালনার আগ্রাদহ, পাঁচরখি, হাসনহাটি, আমদাবাদ, তালা, টোলা, বালিন্দর, বড়ধামাসের মতো গ্রামগুলি দিয়ে এই পদযাত্রা যায়। কর্মসূচিতে গ্রামগুলিতে সরকারি উন্নয়ন কতটা পৌঁছেছে, সরকারি সুবিধা সাধারণ মানুষ কতটা নিচ্ছেন, এ সব খোঁজ নিচ্ছেন দেবুবাবু। কোথায় কোন সমস্যা রয়েছে, সে ব্যাপারেও জিজ্ঞাসা করছেন। কোনও গ্রামে কোনও মোড়লের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন দেবুবাবু।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন এলাকায় অনেকেই নানা সমস্যার কথা তুলে ধরছেন। শনিবার কালনা ১ ব্লকের সূর্যপুর গ্রামে প্রায় ২৫টি পরিবার অভিযোগ করে, আবেদন করেও দীর্ঘদিন ধরে তারা পাট্টা পাচ্ছে না। ঘটনাস্থল থেকেই দেবুবাবু যোগাযোগ করেন কালনা ১ ব্লকের সংশ্লিষ্ট দফতরের এক আধিকারিকের সঙ্গে। তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরে বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেন, দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে। ভাতারের গর্দারমারিতে একটি এলাকায় বাস প্রায় ২০০টি আদিবাসী পরিবারের। তাঁদের অনেকেই দাবি করেন, নিজেরা যেখানে বহু বছর বাস করছেন, সেখানাকার পাট্টা নেই অনেকেরই। জেলার ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে দেবুবাবু তাঁদের জানান, ওই জায়গার বেশ কিছুটা অংশ ব্যক্তি মালিকানাধীন। মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন তিনি।
কালনা ২ ব্লকের একটি গ্রামের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, জাহের স্থানের জন্য জমি মিলছে না। ভাতার, মেমারি, কালনা ১, আউশগ্রামের নানা গ্রামে অনলাইনে তফসিলি উপজাতি শংসাপত্রের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে হয়রানি, স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড না মেলা, শিল্পী ভাতা না পাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান বহু মানুষ। নিকাশি, রাস্তা, পানীয় জলের সমস্যার কথাও কিছু-কিছু এলাকা থেকে উঠে এসেছে এই কর্মসূচিতে।
রবিবার দেবুবাবু বলেন, ‘‘মাঠে কাজ চলেছে। এই সময়ে অনলাইনে লিঙ্ক না থাকার কারণে অনেককেই সাইবার ক্যাফে থেকে ফিরে যেতে হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে সম্প্রতি সরকার অফলাইনে শংসাপত্র দেবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে। এ ছাড়া, শিল্পী ভাতা বাড়ানোরও চেষ্টা হচ্ছে।’’