বিক্ষোভ-সভা। —নিজস্ব চিত্র।
ঠিকা নিরাপত্তা কর্মীদের কাজে ফেরানোর দাবিতে বুধবার সাঁকতোড়িয়ায় ইসিএলের সদর অফিসে বিক্ষোভ দেখাল তৃণমূল এবং আইএনটিটিইউসি। পরে ইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেও এই দাবি জানান দলের নেতারা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে আশ্বাস দেন ইসিএলের ডিরেক্টর (পার্সোনেল) কেএস পাত্র।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠিকা সংস্থার লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না হওয়ায় সেই সংস্থার অধীনে চাকরি করা ইসিএলের প্রায় ২৩০০ নিরাপত্তাকর্মী ১ জুলাই থেকে কাজ হারিয়েছেন। তাঁদের অবিলম্বে পুনর্বহালের দাবি তুলেছে তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, আগাম কিছু না জানিয়ে এ ভাবে রাতারাতি কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ায় পরিবার নিয়ে অথৈ জলে পড়েছেন কর্মীরা। দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে সমর্থন করে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি অভিযোগ করেন, বাম আমলে দেদার কয়লা চুরির জন্য লোকসানের মুখে পড়েছিল ইসিএল। সংস্থা বিআইএফআরে চলে গিয়েছিল। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে কয়লা লুঠ বন্ধ হয়েছে। বিআইএফআর থেকে বেরিয়ে এসেছে ইসিএল। জিতেন্দ্রবাবুর বক্তব্য, ‘‘এই সময়ে ঠিকা নিরাপত্তা কর্মীদের কাজ থেকে বসিয়ে কয়লা চুরিকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। যার পরিণতি সংস্থাকে ফের লোকসানে ফেলা। এতগুলি পরিবারও বিপাকে পড়েছে।’’
বুধবার অবস্থান বিক্ষোভ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে ইসিএলের ডিরেক্টর (পার্সোনেল) কে এস পাত্র বলেন, ‘‘নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।’’ তিনি জানান, পুরনো ঠিকাদারের বিষয়ে বিভাগীয় তদন্ত চলছে। তাই তাঁর লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ হয়নি। নতূন ঠিকাদার নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় শেষের মুখে। ঠিকাকর্মীদের বেতন বাবদ খরচ অনুমোদনের জন্য বোর্ডের কাছে যাওয়া হচ্ছে।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার প্রায় ৯৪টি খনি পাহারার জন্য হাতে রয়েছেন প্রায় ১২০০ সিআইএসএফ এবং ১৪০০ স্থায়ী নিরাপত্তা কর্মী। কিন্তু এত কম রক্ষী দিয়ে কাজ চালানো সম্ভব না হওয়ায় ঠিকাকর্মী নিয়োগ করা হয়। সংস্থার এক আধিকারিকের দাবি, নতুন ঠিকাদার সংস্থাকে আগের কর্মীদেরই কাজে বহালের অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তাতে আশঙ্কা কাটছে না। কারণ, সম্প্রতি কয়লা মন্ত্রক নিরাপত্তার কাজে অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মীদের নিয়োগের পরামর্শ দিয়েছে।
বাম আমলে কয়লা চুরির অভিযোগ প্রসঙ্গে আসানসোলের সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সেই সময়ে যারা কয়লা চুরি করত তাদের নিশ্চয় ওরা চেনে। এখন ওরা ক্ষমতায় আছে, তাদের গ্রেফতার করুক।’’ ইসিএল বিআইএফআর থেকে বেরিয়েছে শ্রমিক-কর্মীদের কর্মদক্ষতায়। বামেরাও আন্দোলন করেছে। এর মধ্যে তৃণমূলের কোনও কৃতিত্ব নেই।