তালা ঝুলছে শৌচাগারে। নিজস্ব চিত্র।
শৌচাগার রয়েছে। কিন্তু তা বন্ধ। ফলে, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে আশপাশের জায়গা বেছে নেন অনেকে। আসানসোল শহরের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি জায়গায় বন্ধ শৌচাগারের পাশ দিয়ে রুমালে নাক চেপে যাতায়াত করতে হয় পথচারীদের।
ছ’বছর আগে আদালত চত্বরে একটি শৌচাগার তৈরি করে পুরসভা। কিন্তু বছরখানেক চলার পরেই তা বন্ধ হয়ে যায়। অথচ এই এলাকাতে রয়েছে অটো, রিকশা, বাস স্ট্যান্ড। রয়েছে সংশোধনাগারের কর্মীদের ব্যারাক, সংশোধনাগার, মোটর ভেহিক্যালস, মহকুমাশাসক ও জেলা পরিষদের দফতর। শৌচাগারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই সংশোধনাগারের সদর দরজার আশেপাশে প্রস্রাব করেন বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা দেবকুমার দাশগুপ্তের। অটোচালক প্রদীপ মিশ্র, গোপাল মুখোপাধ্যায়দের দাবি, “চারপাশে দুর্গন্ধে টেকা দায়। পুরসভা জল সরবারহের ব্যবস্থা করলে আমরাই শৌচাগার পরিষ্কার রাখার রাখার ব্যবস্থা করব।” আইনজীবী শান্তনু চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘এই অবস্থায় সবথেকে সমস্যায় পড়ছেন মহিলারা।’’ নাজিরখানার কাছে আদালত চত্বরে একটি ছোট শৌচাগার থাকলেও সেটির রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় ব্যবহার হয় না বলে জানা গিয়েছে।
আদালত চত্বর থেকে প্রায় সাড়ে চারশো মিটার দূরে বিএনআর মোড়ের কাছে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের উল্টো দিকে, রেল লাইনের পাশে বছর দুয়েক আগে একটি শৌচাগার তৈরি করে ওয়েস্ট বেঙ্গল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড ও পুরসভা। কিন্তু সেটি চালুই হয়নি বলে জানা গিয়েছে। নিউআপার চেলিডাঙার বাসিন্দা জগদীশ দাস জানান, এই এলাকায় ব্যাঙ্ক, সাতটি এটিএম কাউন্টার, বাণিজ্য কর ভবন, চিফ মাইনিং দফতর, জেলা গ্রন্থাগারের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দিনভর ভিড় লেগেই থাকে এলাকায়। শৌচাগার না থাকায় সমস্যায় পড়েন বহু মানুষ।
বছর দুয়েক আগে রবীন্দ্র ভবন লাগোয়া এলাকায় একটি শৌচালয় তৈরি করা হয়। রবীন্দ্র ভবনের জলাধার থেকে সেখানে জল সরবরাহ করা হতো। কিন্তু তিন দিন চালু থাকার পরেই শৌচাগারটি বন্ধ হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, শৌচাগারের কলের মুখও চুরি গিয়েছে বলে জানান স্থানীয় সেলুন-মালিক মিহির প্রামাণিক। অথচ এখানেই রয়েছে শহরের অন্যতম বড় বাস স্টপেজ, বিএনআর মোড়। শৌচালয়ের অভাবে অনেকে রেল লাইনের ধারেই প্রস্রাব করতে বাধ্য হন। রবীন্দ্র ভবনে কর্মরত পুরসভার এক ঠিকাকর্মী অবশ্য বলেন, ‘‘শৌচাগারের সব কটি কলের মুখ চুরি গিয়েছে। ফলে জল নষ্ট হবে ভেবেই ‘ভালভ’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’’
এই প্রসঙ্গে আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘আদালত চত্বর ও ব্যাঙ্কের সামনে শৌচাগারের জল রেলের নর্দমায় ফেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু নর্দমা ব্যবহারের জন্য রেল অনুমতি না দেওয়ায় শৌচাগারগুলি চালু করা যাচ্ছে না। রবীন্দ্র ভবন লাগোয়া শৌচাগারটি কেন চালু নেই, খোঁজ নিয়ে দেখা হবে।’’