ক্ষোভ ‘বৈধ’ চালকদের

রাস্তায় নম্বরহীন টোটো

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরে ২০১৩ সালের শেষে টোটো চলাচল শুরু হয়। যাত্রী পরিবহণে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তাও লাভ করে টোটো। ফলে সেই সময় থেকে ধীরে ধীরে লাভ বেড়েছে টোটো চালকদের।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:০৮
Share:

শহর দাপাচ্ছে টোটো। নিজস্ব চিত্র

এমনিতেই বাস-অটোর সঙ্গে পাল্লা দিতে নাভিশ্বাস উঠছে। সমস্যা আরও বাড়িয়েছে রাস্তা নামা বহু ‘বেআইনি’ টোটো। এমনই অভিযোগ দুর্গাপুরের পুরসভার নথিভুক্ত করা ‘বৈধ’ টোটো চালকদের। তাঁদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে তাঁদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুরে ২০১৩ সালের শেষে টোটো চলাচল শুরু হয়। যাত্রী পরিবহণে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তাও লাভ করে টোটো। ফলে সেই সময় থেকে ধীরে ধীরে লাভ বেড়েছে টোটো চালকদের।

কিন্তু কয়েক বছর পরেই শুরু হয় সমস্যা। প্রথমে যাত্রী তোলাকে কেন্দ্র করে অটো-টোটো বিবাদ বাধে। সমস্যার সমাধানে ২০১৫-য় দুর্গাপুর পুরসভা টোটোগুলিকে টিআই (‌‌টেম্পোরারি আইডেন্টিফিকেশন) নম্বর দিতে শুরু করে। টোটো বিক্রি রুখতে ২০১৬ সালে নিষেধাজ্ঞাও জারি করে প্রশাসন। পুরসভা সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত টিআই নম্বর দিয়ে মোট ৭৫৯টি টোটো নথিভুক্ত করা হয়েছে। সেই নথিভুক্ত টোটো চালকদের অভিযোগ, টিআই নম্বর ছাড়া আরও শ’তিনেক টোটো দুর্গাপুরে চলছে। উদাহরণ হিসাবে তাঁরা জানাচ্ছেন, ক’মাস আগেও ভিড়িঙ্গি-প্রান্তিকা রুটে ৪০টি টোটো চলত। এই মুহূর্তে তা দ্বিগুণ।

Advertisement

‘বাড়তি’ টোটো পথে নামায় শহরে যানজটও হচ্ছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁরা জানান, সিটি সেন্টারের কোর্ট মোড়ে এখন মাঝেমধ্যেই দাঁড়ানোর জায়গা না পেয়ে রাস্তা দখল করে দাঁড়িয়ে থাকছে টোটো। তা ছাড়া, শহরের ঝান্ডাবাগের সুকান্তপল্লি মোড়, বেনাচিতির ভিতরে, প্রান্তিকা, ট্রাঙ্ক রোড, ডিএসপি টাউনশিপের এ-জোন, রঘুনাথপুর, এসবিএসটিসি গ্যারাজ এলাকাতেও টিআই নম্বরবিহীন ‘অবৈধ টোটো’ চলছে বলে অভিযোগ। টোটো চালকদের সংগঠন ‘দুর্গাপুর ই-রিকশা ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’-র সম্পাদক অশোক বড়ুয়া বলেন, ‘‘প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় প্রায়ই নতুন টোটো রাস্তায় নামছে। ফলে সামগ্রিক ভাবেই টোটো চালকেরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, সমস্যা সমাধানে মাস দুয়েক আগে শহরের সব টোটো চালককে ডাকা হয়েছিল। সেখানে ‘অবৈধ’ টোটোগুলিকে শহরের ভিতরে চলাচল করতে বারণ করা হলেও কার্যক্ষেত্রে সেই নিষেধ শোনা হয়নি।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, শহরের মূল রাস্তায় টোটো চলারই কথা নয়। অটো বা মিনিবাস চলাচল যেখানে ঠিক মতো নয়, সেই রাস্তাগুলিতেই টোটো চলার কথা। কিন্তু টোটো চালকদের অভিযোগ, দুর্গাপুর শহরের প্রত্যন্ত এলাকায় যাত্রী তেমন মেলে না। ফলে বাধ্য হয়ে তাঁরা অটো-মিনিবাসের রুটে হাজির হন।

মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা জানিয়েছেন, বেআইনি টোটো-র রমরমা রুখতে মাঝেসাঝে অভিযান চলে। পুলিশ জানায়, দিন কয়েক আগে ন’টি বেআইনি টোটো আটক করা হয়। তবে বৈধ টোটো চালকদের দাবি, অভিযান চালিয়ে এই সমস্যার সমাধান হবে না। তাঁদের মতে, আটক হওয়া টোটোগুলিকে জরিমানা নিয়ে ছেড়ে দিয়ে ফের নতুন অভিযান জরুরি। তা হলেই ‘ভয়’ পেয়ে অবৈধ টোটো চালকেরা পথে নামবেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন