Burdwan university

কোভিডে জমক নেই সরস্বতী পুজোয়, বসন্তে ‘ফুল’ ফোটেনি বর্ধমানের গোলাপবাগে

বিশ্ববিদ্যালয়ের তালা এখনও খোলেনি। ফলে এ বার হস্টেলগুলিও ফাঁকা। সরস্বতী পুজো হয়েছে অনাড়ম্বরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১৭
Share:

এ বার এ ভাবেই পুজো সারা হয়েছে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিতে। নিজস্ব চিত্র

বসন্ত দ্বারে। অথচ কোভিডের কারণে সেই দুয়ারেই ঝুলছে তালা। ফলে নিয়মের বেড়াজালে পড়ে অন্যান্য বছরের মতো জাঁকজমক করে সরস্বতী পুজো হচ্ছে না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে। নমো নমো করে পুজো হলেও, কাটছাঁট করা হয়েছে বেশ কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিভিন্ন ঐতিহ্যেও।

Advertisement

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গোলাপবাগ চত্বরে রয়েছে ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীনিবাসগুলি। সরস্বতী পুজোকে ঘিরে প্রতিবার উৎসবে মেতে ওঠেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বয়ে যায় চোরাগোপ্তা রেষারেষির স্রোত-ও। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের এই ঐতিহ্য বেশ কয়েক দশকের। এই উৎসবের হাত ধরে মন দেওয়া নেওয়ার পালাও চলে পড়ুয়াদের মধ্যে। কিন্তু এ বার সেখানে উল্টো ছবি।

স্কুলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন শুরু হয়েছে সদ্য। কিন্তু কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের তালা এখনও খোলেনি। ফলে এ বার বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলগুলিও ফাঁকা। সরস্বতী পুজো হয়েছে বটে। তবে তা নিতান্তই অনাড়ম্বরে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সম্পাদক মণিকাঞ্চন মণ্ডল বললেন, ‘‘খুবই দুঃখের ব্যাপার। খুব খারাপ লাগছে। এত দিনের ঐতিহ্যে ভাটা পড়ল কোভিডের কারণে। এ বার অনাড়ম্ভর ভাবে হোস্টেলগুলিতে পুজো হয়েছে। এর মধ্যে প্রাণ নেই। গোলাপবাগ জুড়ে যেন বিরহের সুর।’’

Advertisement

সরস্বতী পুজোর পর দিন হস্টেলে হস্টেলে ‘তত্ত্ব’ উপহার দেওয়ার রেওয়াজও বহুদিনের। প্রাক্তনীরা বলছেন, ‘সরস্বতী পুজো বাঙালির ভ্যালেনটাইন্স ডে। আর চকোলেট, মিষ্টি, ফুল ইত্যাদি উপহার দেওয়ার মোড়কে আসলে মনের মানুষকে মনের কথা জানানো। এটা সেই ‘মিষ্টি’ সম্পর্কেরই দ্যোতনা। এ ভাবেই গার্গী, নিবেদিতা, সরোজিনী এবং মীরাবাই হস্টেলের কোনও ছাত্রীর সঙ্গে প্রতি বার মিলে যায় চিত্তরঞ্জন, অরবিন্দ, নেতাজি, চিত্তরঞ্জন, বিবেকানন্দ এবং রবীন্দ্র ছাত্রাবাসের কোনও পড়ুয়ার মন।’ কিন্তু এ বার সেই ঐতিহ্যেও ঘা দিয়েছে কোভিড। গোলাপবাগ ক্যাম্পাসে সত্তরের দশক থেকে চলে আসা সরস্বতী পুজো এবং তাকে ঘিরে যে সব রীতিনীতি প্রচলিত তাতে আচমকাই ছেদ টেনে দিয়েছে করোনা।

নিয়মমাফিক এখন ছাত্রাবাসে ‘বহিরাগত’তের প্রবেশ নিষেধ। এ সব দেখে পড়ুয়াদের অনেকে আবার বলছেন, ‘‘এ বার যা অবস্থা তাতে ‘ঘরের দুয়ারে’ নয়, মনে মনে ‘মনের দুয়ারে’ই পৌঁছে যেতে হবে প্রেমিক-প্রেমিকাদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন