বাজারের হাল কবে ফিরবে, প্রশ্ন উখড়ায়

এলাকায় নেই পানীয় জলের বন্দোবস্ত। বহু খুঁজেও বের করা যায় না অমিল পার্কিং জোন। রাস্তা জোড়া যানজট আর আবর্জনার স্তূপ। এর মাঝেই বসে প্রতি দিনের বাজার। —বছরভর এমনই ‘নেই রাজ্যে’র ছবি উখড়া বাজার জুড়ে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উখড়া শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৬ ০৬:৩৮
Share:

মোটরবাইক-সাইকেলে দখল অর্ধেক রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

এলাকায় নেই পানীয় জলের বন্দোবস্ত। বহু খুঁজেও বের করা যায় না অমিল পার্কিং জোন। রাস্তা জোড়া যানজট আর আবর্জনার স্তূপ। এর মাঝেই বসে প্রতি দিনের বাজার। —বছরভর এমনই ‘নেই রাজ্যে’র ছবি উখড়া বাজার জুড়ে। ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে বাসিন্দা, সকলেরই অভিযোগ, বাজারের হাল ফেরাতে বারবার প্রশাসনে দরবার করা হয়েছে। কিন্তু সমস্যার সুরাহা হয়নি।

Advertisement

শিল্পাঞ্চলের অন্যতম পুরনো বাজারটি রয়েছে উখড়ায়। আশেপাশের ১০টি গ্রাম ও অন্তত ৫০টা গ্রামের দোকানদারদের ভরসা এই বাজার। বাসিন্দারা জানান, এমন ব্যস্ত বাজারে পরিস্রুত পানীয় জলের কোনও বন্দোবস্ত করেনি প্রশাসন। বাজারে কয়েকটি কল রয়েছে। কিন্তু সেগুলি থেকে মাসে মেরেকেটে এক থেকে ৩ দিন জল মেলে। এক ব্যবসায়ী জানান, ৫০ টাকা দরে প্রতি দিন জল কিনতে হয়। বাজারে কোথাও শৌচাগারও নেই। এর জেরে নাকাল হতে হয় সকলকেই।

বাজারের প্রধান সমস্যা যানজট। অন্যতম প্রাধান রাস্তা নেতাজি সুভাষ বসু রোডের দু’ধারে জাঁকিয়ে বসেছেন হকারেরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, বিভিন্ন দোকানের শেড বাড়তে বাড়তে কার্যত রাস্তায় চলে এসেছে। এ ছাড়া বাজারে গেলে নজরে পড়ে দিনভর পণ্য বোঝাই ও খালাস চলছে। বাজারে কোথাও পার্কিং জোন না থাকায় দোকানের সামনেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখতে বাধ্য হন দোকানি ও ক্রেতারা। ব্যবসায়ীরা জানান, এর জেরে রাস্তা সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। বাজার করতে আসা এক বাসিন্দার আক্ষেপ, ‘‘রাস্তা কমতে কমতে অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। যা অবস্থা তাতে চলাফেরা করায় দায়!’’

Advertisement

উখড়া বণিকসভার অভিযোগ, নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরি হলেও দীর্ঘদিন ধরে তা ব্যবহার করা হয় না। অধিকাংশ বাস, গাড়িই ব্যস্ত বাজপেয়ি মোড়ের কাছে বাঁক ঘুরিয়ে নেয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাসস্ট্যান্ডটি চালু করা গেলে যানজটে সমস্যার খানিক সুরাহা হবে। বণিকসভার দাবি, যানজট এড়াতে শঙ্করপুর মোেড়় রেললাইনের উপরে উড়ালপুল তৈরি করতে হবে। যানজট রুখতে জবরদখল উচ্ছেদ ও রিকশা, গাড়ির যাতায়াত নজরদারি করতে হবে বলেও দাবি বাসিন্দাদের।

বাজার এলাকার সাফাই নিয়েও বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, বছর দুয়েক আগে পঞ্চায়েতের তরফে বাজারের রাস্তার দু’পাশে নর্দমা তৈরি করা হয়। কিন্তু তা বছরে এক বারের বেশি সাফাই হয় না বলে অভিযোগ। দোকানিরাও পচে যাওয়া সব্জি, ফল ওই নালাতেই ফেলেন। এই পরিস্থিতিতে অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তার উপরে নোংরা জল উঠে আসে বলে দাবি বাসিন্দাদের।

বণিকসভার তরফে এলাকায় একটি দমকলেরও দাবি জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানান, রানিগঞ্জ বা দুর্গাপুর থেকে দমকলের ইঞ্জিন আসতে প্রায় মিনিট ৪০ সময় লাগে। প্রশাসনের সূত্রে জানা গেল, বছর খানেক আগে উখড়ায় দমকল কেন্দ্র তৈরির জন্য এলাকা পরিদর্শন করেছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু জমিজটের জেরে তা আর হয়ে বাস্তবায়িত হয়নি বলে জানা গেল। তবে উখড়া বণিক সভার তরফে মহাদেব দত্তের দাবি, ‘‘আমরা একটি জমির ব্যবস্থা করেছি। আবার দমকল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করতে চাইছি। এখানে দমকল তৈরি হলে পাণ্ডবেশ্বর, হরিপুর, লাউদোহার মানুষও উপকৃত হবেন।’’

উখড়া পঞ্চায়েতের প্রধান দয়াময় সিংহের অবশ্য দাবি, ‘‘বাজারে ট্যাঙ্কারে জল সরবরাহ করা হয়। জল প্রকল্পের কাজও দ্রুত শেষ হবে। বাকি সমস্যা সমাধানে পরিকল্পনা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন