মোটরবাইকের সূত্রেই ধরা পড়ল আউশগ্রামের গণধর্ষণের ঘটনায় দুই অভিযুক্ত। মঙ্গলবার কচু সোরেন ও জহর বাস্কে নামে ওই দুই অভিযুক্তকে পাকড়াও করার পরে এমনই দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
আউশগ্রামের যাদবগঞ্জে চড়কের মেলা দেখতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছিল বছর ষোলোর কিশোরী। তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটরবাইকে তুলে নিয়ে গিয়ে আউশগ্রামের বননবগ্রামের জঙ্গলের ভিতর দু’জন যুবক ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দু’জনেরই বাড়ি ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে আউশগ্রামের যাদুগোড়িয়া গ্রামে। প্রথমে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়। পুলিশের দাবি, ঘটনার কথা স্বীকার করার পরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ, বুধবার ধৃতদের আদালতে তোলা হবে। পুলিশ জানায়, ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও পকসো আইনের ৪ ও ৬ ধারায় মামলা রুজু করেছে।
কিন্তু কী ভাবে ওই দু’জনের নাগাল পেল পুলিশ? জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, “অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা খুব সহজ ছিল না। অভিযোগকারীর বয়ান ও স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে কথা বলে বেশ কয়েক জনকে সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়। তাদের মধ্যে থেকে বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়ে ধৃতরা দোষ স্বীকার করে।”
এই ‘সন্দেহভাজনদের’ তালিকা তৈরিতে সাহায্য করেছে নির্যাতিতার বয়ান, দাবি পুলিশের। আউশগ্রামের আই সি সুজিত পতি জানান, ধৃতদের বয়স ১৯-২০ বছর। ধৃতরা ওই কিশোরীকে মোটরবাইকে চাপিয়ে জঙ্গলের দিকে নিয়ে যেতে অনেকেই দেখেছেন—এই তথ্য হাতে আসার পর তদন্ত করতে পুলিশের সুবিধা হয়েছে। এক তদন্তকারী জানান, ওই কিশোরীর কাছ থেকেই মোটরবাইকটি কী রকম, সেটির রং কেমন, দু’জনের চেহারা ও বয়স কত, তা জানা যায়। এর পরেই পুলিশ মেলায় আসা বিভিন্ন লোকজন, ব্যবসায়ী, এমনকী জঙ্গলের ভিতর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন, এমন কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে এলাকার সাত-আট জনের নাম পায় পুলিশ। তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশ চার জনকে আউশগ্রাম থানায় আনে। পুলিশের দাবি, দীর্ঘক্ষণের জেরার পরে ওই দু’জন ঘটনার কথা স্বীকার করে।