অনন্যা দত্ত (বাঁ দিকে) ও পূজা মাজি।
সংসারে অভাব সত্ত্বেও সন্তানদের পড়াশোনা করিয়েছেন তাঁরা। আরও পড়াশোনা করে বাবা-মায়ের সেই কষ্টের মান রাখতে চায় ছেলেমেয়েরাও। কিন্তু এর পরে পড়াশোনা কী ভাবে করাবেন, সেই চিন্তাতেই এখন রাতের ঘুম উড়েছে মাধ্যমিকে সফল অনেক পড়ুয়ার অভিভাবক। সেই তালিকায় রয়েছেন এই শিল্পাঞ্চলের দুই অভিভাবকও।
কাঁকসার সিলামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অনন্যা দত্ত মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৪৪। পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের অভাব ঘোচানোই তার লক্ষ্য। তার বাবা কল্যাণবাবু প্রতিদিন সিলামপুর থেকে দুর্গাপুর শহরে এসে বাড়ি-বাড়ি সংবাদপত্র বিলি করেন। তিনি জানান, শিক্ষকেরা মেয়েকে প্রায় বিনামূল্যে টিউশন দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘অভাবের সংসার আমাদের। মেয়ে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে চায়। কী ভাবে সম্ভব হবে, জানি না!’’
বার্নপুরের সাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী পূজা মাজি পেয়েছে ৫৭২। বাবা গৌতমবাবু রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘মাস ফুরোলে মেরেকেটে হাজার পাঁচেক টাকা রোজগার। সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। এত দিন সবাই সাহায্য করায় মেয়ের পড়াশোনা চালাতে পেরেছি। এ বার কী হবে জানি না।’’ ইঞ্জিনিয়ার হতে চাওয়া পূজা বলে, ‘‘একবেলা খেয়েও পড়া চালাতে চাই।’’ তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্কুলের তরফে যথাসাধ্য সাহায্য করা হবে পূজাকে।