শিক্ষা দফতরের রিপোর্টে ছাত্রের চোখে ক্ষতি হওয়ার জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষকে দায়ী করা হয়েছিল। কিন্তু মাধবডিহি থানার রিপোর্ট স্কুল কর্তৃপক্ষকে ‘ক্লিনচিট’ দিয়েছে। মঙ্গলবার ওই ছাত্রের বাবা সত্যনারায়ণ মাজি ফের তদন্ত চেয়ে আবেদন করেছেন বর্ধমান সিজিএম আদালতে। বিচারক সঞ্জয়রঞ্জন পাল, আগামী ১২ জুন শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মাধবডিহির ছোট বৈনান উচ্চবিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় ডান চোখে আঘাত পায় সৌম্যদীপ মাজি। স্কুলেরই এক শিক্ষক ওই ছাত্রকে ও তার মাকে প্রথমে রায়না ২ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সেখান থেকে বর্ধমানে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করান। পরে ওই ছাত্রের পরিজনরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও সৌম্যদীপের দৃষ্টিশক্তি ফেরেনি। ২০১২ সালের ১৩ মার্চ ওই ঘটনার পরে সৌম্যদীপের বাবা স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মাধবডিহি থানা, জেলাশাসক ও মানবাধিকার কমিশনে অভিযোগ করেন। ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০ লক্ষ টাকাও দাবি করেন। জেলাশাসকের নির্দেশে শিক্ষা দফতর ঘটনার তদন্ত শুরু করে। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) তাঁর রিপোর্টে স্কুলের গাফিলতির কথাও উল্লেখ করেন।
স্কুল কর্তৃপক্ষের যদিও দাবি, তাঁরা মানবাধিকার কমিশনের কাছে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কোনও গাফিলতির প্রমাণ পায়নি। আবার পুলিশও পায়নি। স্কুলের দাবি, স্কুল চলকালীন বা স্কুলের ভিতর ওই ধরণের ঘটনা ঘটেনি।
এ দিন সত্যনারায়ণবাবুর আইনজীবী কুণাল বক্সি বলেন, “জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের রিপোর্টে স্কুল কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কথা স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে। অথচ পুলিশ কোনও দোষই খুঁজে পেল না। সত্যনারায়ণবাবু সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ করার পরেও ছেলের দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারেননি।” জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, “শিক্ষা দফতরের তদন্তে কী উঠে এসেছে বলতে পারব না। তবে আমাদের তদন্তে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও গাফিলতি উঠে আসেনি।” জেলার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) খগেন্দ্রনাথ রায়ের কথায়, “বেশ কয়েক বছর আগেকার কথা। সেই সময় আমি ছিলাম না। তাই ঠিক কী রিপোর্ট জমা পড়েছিল বলা সম্ভব নয়।”