দামোদরে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে গিয়েছিল পাঁচ কিশোর-কিশোরী। রবিবার সেই ঘটনায় গলসির স্থানীয় দুই যুবকের চেষ্টায় তিন জনকে বাঁচানো গিয়েছে। তবে বাকি দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে রাতে।
ঘটনার পরে বালিঘাটের শ্রমিকদের কয়েকটি ঘরে ও একটি মাটি কাটার যন্ত্রে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। খবর পেয়ে গলসি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রবিবারই জামালপুরের বড়টিকরায় দামোদরে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে যান মা ও মেয়ে। রাত পর্যন্ত তাঁদের কোনও হদিস মেলেনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুরে নিজের দুই ছেলেমেয়ে এবং তাদের তিন বন্ধুকে নিয়ে দামোদরের ওই বালিঘাটে স্নান করতে গিয়েছিলেন গলসির গোবডাল গ্রামের বাসিন্দা অজয় ঘোষ। সেই সময় হঠাৎই তলিয়ে যায় সৌভিক মণ্ডল। বাকি চার জনও হাবুডুবু খেতে থাকে। তা দেখে নদীর পাড়েই জ্ঞান হারান অজয়বাবু।
সাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ঘটনাটি দেখে ছুটে আসেন দশরথ বাগদি ও বিশু বাগদি নামে স্থানীয় দুই বাসিন্দা। সময় নষ্ট না করে তাঁরাই জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রাণ বাঁচান মানব ঘোষ, রানা মণ্ডল এবং রাজ ঘোষের। তবে বাঁচানো যায়নি অজয়বাবুর মেয়ে অপর্ণা (১৩) ও তার বন্ধু সৌভিককে (১৩)। পরে আতঙ্ক কিছুটা কাটিয়ে রানা বলে, ‘‘জলের তলায় বড় গর্ত ছিল। তার মধ্যেই পড়ে ডুবে যাচ্ছিলাম। আমাদের চিৎকার শুনে দু’জন কাকু জল থেকে টেনে তোলেন।”
সৌভিক স্থানীয় একটি স্কুলের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। অজয়বাবুর ছেলে মানব, মেয়ে অপর্ণা ও তার দুই বন্ধু গুজরাতের গাঁধীনগরের কাছে একটি স্কুলে পড়াশোনো করে। তাদের অভিভাবকেরাও কর্মসূত্রে সেখানে থাকেন। গত ২৮ এপ্রিল গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন অজয়বাবুরা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সৌভিক ও অপর্ণার দেহ দেহ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে রাতের দিকে মৎস্যজীবীদের কাছে থাকা কাঁটাজাল দিয়ে জলের ভিতর থেকে ওই দুই পড়ুয়ার নিথর দেহ তুলে আনা হয়।
তার পরেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে জনতা। পুলিশের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ দেখান এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, যথেচ্ছ বালি তোলার ফলে গর্ত তৈরি হয়েই এই দুর্ঘটনা।