রাস্তায় পুলিশি টহল। নিজস্ব চিত্র
ট্রাকের ধাক্কায় সাইকেল আরোহীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল দুর্গাপুরের রঘুনাথপুর এলাকা। ট্রাকে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরানো, অবরোধ, পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া— সবই হয়েছে। পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে দেখে পরে বিশাল পুলিশবাহিনী নামাতে হয়। বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। ময়না-তদন্তের জন্য দেহ দুর্গাপুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত প্রায় ৮টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। সাইকেলে করে রঘুনাথপুর থেকে কমলপুরের দিকে যাচ্ছিলেন এক ব্যক্তি। একটি সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁকে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। ট্রাক চালক ও খালাসি পালিয়ে যায়। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ট্রাকে ভাঙচুর চালান। আগুন ধরিয়ে দেন। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ পৌঁছয়। তখন বাসিন্দারা পুলিশকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করেন। বিক্ষোভের মুখে পড়ে বেশ কিছুক্ষণ পুলিশকর্মীরা দেহের কাছে পৌঁছতেই পারেননি। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে শেষে ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদীর নেতৃত্বে আরও পুলিশ এলাকায় পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীদের হঠিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে। আগুন নেভাতে প্রথমে দমকলের একটি ইঞ্জিন আসে। পরে আরও একটি ইঞ্জিন আসে। ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নেভে। ডিসি (পূর্ব) বলেন, ‘‘ট্রাক চালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। পাশাপাশি যাঁরা পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছেন এবং ট্রাকে আগুন ধরিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বৃহস্পতিবার রাতের দুর্ঘটনার পরে ওই এলাকায় পুলিশি টহলদারি চালু করা হয়েছে। শুক্রবারও কড়া পুলিশি নজরদারি ছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, এই রাস্তা দিয়ে বিভিন্ন শিল্প-কারখানার বড় বড় লরি, ট্রাক যাতায়াত করে। অথচ ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের উপযুক্ত কোনও ব্যবস্থা চালু করা হয়নি। ফলে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় পথচারী, সাইকেল আরোহীদের। রাস্তার ধারে দোকান রয়েছে। দু’এক জায়গায় রাস্তার ধারে দিনে আনাজের বাজার বসে। কমলপুরে একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল রয়েছে। দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক থেকে বহু পুলকার এই রাস্তা দিয়েই দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন স্কুলে আসা-যাওয়া করে। অভিযোগ, সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটির বেশ গতিতেই ছিল। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকলে বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে দাবি বাসিন্দাদের। পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে ব্যপারে চিন্তা-ভাবনা করা হবে।