পড়শি-বিবাদ ঘিরে অশান্তি

শহরের ৪৪ নম্বর রাস্তা এলাকার বাসিন্দা মুন্নিদেবী থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে এসে গালিগালাজ শুরু করে এলাকায় ‘দুষ্কৃতী’ বলে পরিচিত এক ব্যক্তি। তিনি প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বাড়ির অদূরেই থাকা ছেলে এই আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরে মুন্নিদেবীর পড়শিদের কয়েকজন এগিয়ে আসায় অভিযুক্ত চম্পট দেয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চিত্তরঞ্জন শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০২:৪৪
Share:

চিত্তরঞ্জন থানার সামনে দু’দলের কর্মী, সমর্থকেরা। নিজস্ব চিত্র

দুই পড়শির বিবাদকে কেন্দ্র করে অশান্তি বাধল তৃণমূল-বিজেপিতে। এর জেরে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত দফায়-দফায় উত্তেজনা ছড়াল চিত্তরঞ্জন রেল শহরে। দু’পক্ষই বেশ কয়েক ঘণ্টা চিত্তরঞ্জন থানায় অবস্থান-বিক্ষোভ করে। একে অপরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করে। পুলিশ যদিও ঘটনাটিকে ‘রাজনৈতিক বিবাদ’ বলে মানতে চায়নি।

Advertisement

শহরের ৪৪ নম্বর রাস্তা এলাকার বাসিন্দা মুন্নিদেবী থানায় লিখিত অভিযোগ করে জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তাঁর বাড়িতে এসে গালিগালাজ শুরু করে এলাকায় ‘দুষ্কৃতী’ বলে পরিচিত এক ব্যক্তি। তিনি প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বাড়ির অদূরেই থাকা ছেলে এই আচরণের প্রতিবাদ করলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এর পরে মুন্নিদেবীর পড়শিদের কয়েকজন এগিয়ে আসায় অভিযুক্ত চম্পট দেয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুন্নিদেবীকে চিত্তরঞ্জনের কস্তুরবা গাঁধী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেখান থেকেই তিনি সং‌বাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ‘‘পুরনো বিবাদকে কেন্দ্র করেই আমার উপরে হামলা চালানো হয়।’’ অশান্তির এখানেই শেষ নয়। অভিযোগ, রাত ১২টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন রেল শহরের ৪৬ নম্বর রাস্তা লাগোয়া একটি ঝুপড়ির বাসিন্দা সুবল মণ্ডলের ঘরে কয়েকজন ‘দুষ্কৃতী’ হামলা চালায়। তাতে তাঁর স্ত্রী কবিতাদেবী জখম হন বলে অভিযোগ সুবলবাবুর। এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। চিত্তরঞ্জন থানায় কবিতাদেবী লিখিত অভিযোগ করে বলেন, ‘‘মুন্নিদেবীর ছেলে অনিল বিশ্বকর্মার নেতৃত্বে হামলা হয়েছে। কেন এই হামলা, জানি না।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুন্নিদেবী।

Advertisement

এ দিকে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হয় রাজনৈতিক চাপান-উতোর। অভিযুক্তদের গ্রেফতারির দাবিতে অভিযোগে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী- সমর্থক চিত্তরঞ্জন থানায় অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বিজেপির সদস্য, সমর্থকেরাও থানায় উপস্থিত হয়ে কবিতা মণ্ডলের ঘরে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।

এই পরিস্থিতিতে দুই রাজনৈতিক দলের সদস্যেরা বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়। পুলিশ দু’পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তৃণমূলের চিত্তরঞ্জন শহর সভাপতি তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি-আশ্রিত দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। মহিলাদের মারধর করছে। বৃহস্পতিবারও শহরের এক মহিলাকে মারধর করা হয়েছে।’’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক (আসানসোল) শিবপ্রসাদ বর্মণ দাবি করেন, ‘‘সুবলবাবু, তাঁর স্ত্রী কবিতাদেবী বিজেপির সক্রিয় কর্মী। অনেকদিন থেকেই তাঁদের উপরে হামলা চালাচ্ছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবারও তৃণমূল- আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই হামলা চালিয়েছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুন্নিদেবী এবং কবিতাদেবীর পরিবারের মধ্যে মূলত ঝুপড়ি ও তার ভাড়া সংক্রান্ত বিষয়ে গোলমাল রয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি সেন্ট্রাল (সেন্ট্রাল) অনমিত্র দাস অবশ্য দাবি করেন, ‘‘এটি কোনও রাজনৈতিক বিবাদের ঘটনা নয়। দু’টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এক জনকে আটক করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন