কৃষকসভার অবরোধে মারধর

সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা ও খেতমজুরদের কাজের দাবিতে জেলার সাতটি জায়গায় পথ অবরোধ করেছিল কৃষকসভা। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে চলা ওই অবরোধেই প্রহৃত হলেন এক সিপিএম নেতা। সিপিএমের অভিযোগ, বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর এলাকার খণ্ডঘোষ থানার পলেমপুর এলাকায় এ দিন দলের নেতা কওসর আলি শেখ ও জেলা নেতা আকতার শেখ পথ অবরোধ কর্মসূচির জন্য পতাকা টাঙানোর কাজ করছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৫ ০১:৪৮
Share:

পলেমপুরে চলছে কৃষকসভার অবরোধ।

সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা ও খেতমজুরদের কাজের দাবিতে জেলার সাতটি জায়গায় পথ অবরোধ করেছিল কৃষকসভা। মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে চলা ওই অবরোধেই প্রহৃত হলেন এক সিপিএম নেতা।

Advertisement

সিপিএমের অভিযোগ, বর্ধমানের দক্ষিণ দামোদর এলাকার খণ্ডঘোষ থানার পলেমপুর এলাকায় এ দিন দলের নেতা কওসর আলি শেখ ও জেলা নেতা আকতার শেখ পথ অবরোধ কর্মসূচির জন্য পতাকা টাঙানোর কাজ করছিলেন। সেই সময়েই তৃণমূলের কয়েকজন মোটরবাইক নিয়ে এসে প্রথমে পতাকা টাঙাতে বাধা দেয়, পরে মারধর করে বলে অভিযোগ। সেই আঘাতেই মাথা ফেটে যায় কওসর আলি শেখের। বর্ধমানে জাতীয় সড়কের উপর বাইপাসে একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি আছেন তিনি। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান সিপিএমের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক অমল হালদার, সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য উদয় সরকার। পলেমপুর থেকে মাঝখান্ডা পর্যন্ত মিছিলও করেন তাঁরা। মাঝখান্ডায় মিছিল শেষ হতেই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ফের তাঁদের উপর আক্রমন করে বলে অভিযোগ সিপিএমের। এ বার দূর থেকে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ইট-পাথর ছুড়তে থাকে বলে তাঁদের দাবি। ইটের আঘাতে দলের অন্তত ১৬ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছে বলেও জানান তাঁরা। পরে পলেমপুরে নির্দিষ্ট কর্মসূচি অনুযায়ী পথ অবরোধও হয়।


প্রহৃত কওসর আলি শেখ।

Advertisement

দলের জেলা কমিটির প্রাক্তন সম্পাদক অমল হালদার বলেন, “ধান-আলুর দাম তো তৃণমূলের চাষিরাও পাচ্ছে না। সেখানে এই ভাবে কয়েকজন দুষ্কৃতীকে দিয়ে গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করা চাষিদের উপর আক্রমণ করার মানে কী?” তৃণমূল অবশ্য জানিয়েছে, এই পথ অবরোধ চলাকালীন বড়বৈনান এলাকার একটি অ্যাম্বুল্যান্স আটকে পড়ে। অসুস্থ ব্যক্তি অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতর ছটফট করছিলেন, সেই দেখে স্থানীয়রা সিপিএম নেতৃত্বকে অনুরোধ করে অ্যাম্বুল্যান্সটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য। তাতেই বচসা শুরু হয়ে যায়। তৃণমূলের রায়না ব্লকের সভাপতি শৈলেন সাঁইয়ের পাল্টা অভিযোগ, “সিপিএম আমাদের দু’জন কর্মীর ঘর ভেঙে দিয়েছে, ৮টি মোটর বাইক সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে। তার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকালে আমরা একটি মিছিলও বের করেছি।”

এ দিকে, সকাল থেকে চলা পথ অবরোধে হয়রান হয়েছেন সাধারণ মানুষ। গরমের মধ্যে ঠাই বাসের ভিতর, গাড়িতে বসে থাকতে হয়েছে তাঁদের। মোটরবাইক নিয়ে যাঁরা যাতায়াত করছিলেন, তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। কোথাও ঘন্টাখানেক, কোথাও দু’ঘন্টা অবরোধ হয়েছে। ফলে জলের জন্যও হাহাকার দেখা দিয়েছিল। গুসকরার মইদুল শেখ কিংবা নর্জা মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকা আত্মজা চৌধুরীরা বলেন, “অসম্ভব ব্যাপার! এ ভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির আন্দোলনের মানে কী? এ যা অবস্থা যে কোনও সময় শরীর খারাপ হয়ে যাবে।”

তবে মানুষের কষ্টের কথা স্বীকার করে নিয়ে জেলা কৃষকসভার সম্পাদক আব্দুর রেজ্জাক মণ্ডল বলেন, “কখনও গরম, কখনও শীত তো থাকবেই, তার মধ্যেই তো চাষিদের জন্য ও মানুষের জন্য আন্দোলন করতে হবে।” ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক বনমালী হাজরার কটাক্ষ, “মানুষের জন্য আন্দোলন করলে কোনও রাজনৈতিক দল মানুষকে কষ্ট দেয়!”

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন