যুবকের মৃত্যু,চলল ভাঙচুর

ঘটনার সূত্রপাত ২২ মে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে বাড়ি ফিরে পিঠে ও বুকে ব্যাথার কথা জানান শাসপুর দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা বশিষ্ঠবাবু। প্রথমে কালনা, সেখান থেকে কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার সেখানেই মারা যান তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

পোড়া বাড়ি শাসপুরে। নিজস্ব চিত্র

গণ্ডগোলটা শুরু হয়েছিল মদের ঠেকে। বচসা থেকে হাতাহাতি, মারামারি। তার জেরে মৃত্যুও হয় এক যুবকের। তারপরেই ভাঙচুর, লুঠপাট, আগুনে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কালনার শাসপুরের মল্লিকবাগান। অভিযোগ, মৃত বশিষ্ঠ মণ্ডলের (৪৬) পরিবার ও পড়শিরাই চারটি বাড়ি ও একটি ছোট চালকলে আগুন ধরান। চলে ভাঙচুরও। ঘটনায় মোট ১৫ জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।

Advertisement

ঘটনার সূত্রপাত ২২ মে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই রাতে বাড়ি ফিরে পিঠে ও বুকে ব্যাথার কথা জানান শাসপুর দিঘিরপাড় এলাকার বাসিন্দা বশিষ্ঠবাবু। প্রথমে কালনা, সেখান থেকে কল্যাণী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। বৃহস্পতিবার সেখানেই মারা যান তিনি। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ দেহ বাড়ি ফেরার পরেই শুরু হয়ে যায় ধুন্ধুমার। অভিযোগ, বশিষ্ঠবাবুর আত্মীয় ও এলাকার বাসিন্দারা দলে দলে লাঠি-সোঁটা নিয়ে হাজির হয়ে যান মল্লিকবাগানে। সেখানে কমল পাল ও তাঁর তিন ভাইয়ের বাড়িতে ঢুকে টিভি, আলমারি ভাঙচুর, টাকাপয়সা লুঠপাট চলে। কাছেই লক্ষ্ণন পাল নামে এক ব্যক্তির চালকলেও চলে ভাঙচুর। এরপরে চারটি বাড়ি ও চালকলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পোড়ানো হয় একটি মোটরভ্যানও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চলে। পরে তাঁরাই সাবমার্সিবল পাম্প থেকে জল এনে আগুন নেভান। ধৃতদের নামে লুঠপাট, অগ্নিসংযোগ ও জিনিসপত্র ভাঙচুরের মামলা হয়েছে।

শুক্রবার ওই এলাকার বাসিন্দাদারা দাবি করেন, ঘটনার রাতে ধানকলের মিস্ত্রি, এক সঙ্গীকে নিয়ে মদ্যপান করছিলেন বশিষ্ঠবাবু। কিছুটা দূরে আর একটি দলও মদ্যপান করছিল। তাদের সঙ্গেই বচসা বাধে বশিষ্ঠবাবুদের। আক্রান্ত কমল পালের পড়শিদের দাবি, ওই সময় কাজ সেরে বাড়ি ফিরছিলেন কমলবাবু। বচসা দেখে থামাতেও যান। কিন্তু তাঁকেই মারধর করে বশিষ্ঠর লোকেরা। যদিও মৃতের পরিবারের পাল্টা দাবি, ওই দিন এক জনের ধানকলে কাজ করা নিয়ে কমলবাবুর সঙ্গে বশিষ্ঠবাবুর বচসা হয়। তিনিই দলবল এনে চড়াও হন। বশিষ্ঠবাবুর ভাই পবিত্র মণ্ডলের দাবি, ‘‘কমলের লোকজনের হামলাতেই দাদা জখম হন। বিষয়টি আমি পুলিশকে জানিয়েছি।’’

Advertisement

এ দিন মল্লিকবাগানে গিয়ে দেখা যায়, পোড়া, ভাঙা ঘরের সামনে স্থানীয় বাসিন্দাদের জটলা। ওই চালকল মালিক দাবি করেন, ২৭০ বস্তা ধান ছিল। সবটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পুড়ে গিয়েছে যন্ত্রপাতিও। বশিষ্ঠবাবুর বাড়ির এলাকা শাসপুর দিঘিরপাড়ে গিয়েও দেখা যায়, এলাকা পুরুষশূন্য। মাঝেমধ্যেই চলছে পুলিশি টহল। কালনা থানার দাবি, দু’পক্ষের মোট ১৫ জনকে ধরা হয়েছে। কমল পালও রয়েছেন তার মধ্যে। জেরা করে ঘটনার কারণ জানার চেষ্টা চলছে বলেও পুলিশের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন