জল আনতে দল বেঁধে। নিজস্ব চিত্র
চার দিনেও জল সরবরাহ স্বাভাবিক হল না দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপে। শনিবার থেকে জলের যে আকাল শুরু হয়েছে, মঙ্গলবারও তা পুরোপুরি কাটেনি। ডিএসপি কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানান, সাময়িক কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার পরে এ দিন থেকে জল সরবরাহ শুরু হয়েছে। সমস্যা মেটাতে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ করা হচ্ছে।
গাঁধী মোড়ে জলের পাইপ ফাটায় সমস্যা শুরু হয়। ৩০ ইঞ্চি, ২৭ ইঞ্চি ও ২০ ইঞ্চির তিনটি পাইপলাইন দিয়ে টাউনশিপের জলাধারে জল পৌঁছয়। তার পরে তা সরবরাহ করা হয় আবাসনে। শনিবার গাঁধী মোড়ের কাছে ৩০ ও ২০ ইঞ্চির পাইপলাইনে ফাটল দেখা দেয়। দ্রুততার সঙ্গে ৩০ ইঞ্চির পাইপলাইনে প্রায় দেড়শো মিটার অংশ সাময়িক মেরামতি হয়। কিন্তু তা কাজে আসেনি। শেষে ২০ ইঞ্চি পাইপলাইনে মেরামতির পরে সেটি ও ২৭ ইঞ্চির পাইপ দিয়ে টাউনশিপের ১০টি জলাধারে অল্প-অল্প করে জল তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়। ফলে, মঙ্গলবারও জলের জন্য হাহাকার কমেনি টাউনশিপে।
এ দিনও ডিএসপি ৪১টি ট্যাঙ্কারে করে পাড়ায়-পাড়ায় জল পাঠায়। পুরসভা, নানা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও ক্লাবের পক্ষ থেকেও ট্যাঙ্কারে করে জল সরবরাহ করা হয়। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, প্রবল গরমে জলের চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। তাছাড়া ট্যাঙ্কার থেকে জল নেওয়ার জন্য হুড়োহুড়িতে অনেকেই জল পাচ্ছেন না। এ দিন দুপুরে পিসি রোডে গিয়ে দেখা যায়, ট্যাঙ্কার আসার আগেই লম্বা লাইন পড়ে গিয়েছে। প্রথম দিকে হুড়োহুড়ি শুরু হলেও পরে পরিস্থিতি বুঝে বাসিন্দারা সংযত হয়ে লাইন দিয়ে জল নিতে শুরু করেন। রোদে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে যাতে কেউ অসুস্থ হয়ে না পড়েন সে জন্য শরবতের ব্যবস্থা করতে দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দা সাথী মাজিকে। এলাকার বাসিন্দা কৃষ্ণা সিংহরায় বলেন, ‘‘পাড়ায় আমরা এক সঙ্গে হয়ে থাকি। কেউ জল নিয়ে যেতে না পারলে আমরা চেষ্টা করছি বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসতে।’’
ডিএসপি-র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক চিন্ময় সমাজদার বলেন, ‘‘ক্ষতিগ্রস্ত ৩০ ইঞ্চি পাইপের দেড়শো মিটারের পুরোটা বদলে ফেলতে ৪-৫ দিন লাগবে। আমাদের কাজ নির্বিঘ্নে করতে স্থানীয় প্রশাসন সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। সঙ্কটের সময়ে আমরা বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়েছি।’’