ক্লাস্টারের আওতায় এলে সুবিধা, পরামর্শ তাঁতিদের

বস্ত্র দফতরের কর্তারা জানান, আগামী চার মাসের মধ্যে আরও শ’খানেক ক্লাস্টার গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৪৫
Share:

পূর্বস্থলীর শিবিরে। নিজস্ব চিত্র

হস্তচালিত তাঁতের ক্লাস্টারের সুফল বোঝাতে রাজ্য জুড়ে তাঁতিদের নিয়ে শিবির করার পরিকল্পনা নিয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ এবং বস্ত্র দফতর। রবিবার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের পারুলডাঙা নসরতপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে শুরু হল এমন শিবির।

Advertisement

বস্ত্র দফতরের আধিকারিকেরা জানান, ১৯৯৫ সালে তাঁতশিল্পীদের নিয়ে একটি সমীক্ষায় দেখা যায়, এ রাজ্যে তাঁতির সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সাড়ে ছ’লক্ষেরও বেশি মানুষ। প্রায় দেড় লক্ষ তাঁতিকে সমবায়ের আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু পরে বহু সমবায় নষ্ট হয়ে যায়। ২০০৭-০৮ সালে তাঁতের সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষকে এক ছাতার তলায় আনার জন্য ক্লাস্টার গড়ার পরিকল্পনা হয়।

শুরুতে ক্লাস্টারের সংখ্যা ছিল কম। ২০১১ সালে তা ছিল ৩০টি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১০৬টি। বস্ত্র দফতরের কর্তারা জানান, আগামী চার মাসের মধ্যে আরও শ’খানেক ক্লাস্টার গড়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। কী ভাবে এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়া যায়, কতটা সুবিধা মেলে— এ দিন শিবিরে তাঁতিদের সে সব বিশদে বোঝানো হয়। আধিকারিকেরা জানান, শুধু তাঁতশিল্পী নয়, রং, সুতো তৈরি, নলি পাকানো-সহ নানা কাজে যুক্ত সমস্ত মানুষকে এর অন্তর্ভুক্ত করা যায়। ক্লাস্টার গঠনের পরে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, বহুমুখী কাপড় তৈরি, উৎপাদিত পণ্য সরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন মেলায় বিক্রির ব্যবস্থা, নতুন তাঁতঘর তৈরি করে দেওয়া, পরিষেবা কেন্দ্র গড়া, মেলায় যাতায়াতের খরচের মতো নানা সুবিধা দেওয়া হয়। বস্ত্র দফতরের যুগ্ম অধিকর্তা এ কে মাইতি বলেন, ‘‘তাঁতের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের নিয়ম মেনে ক্লাস্টার গড়তে হবে। তাহলেই নানা সুবিধা মিলবে।’’

Advertisement

সভায় জানানো হয়, কালনা ও কাটোয়া মহকুমার তাঁতিদের নিয়ে ১৬টি ক্লাস্টার গড়া হয়েছে। কালনায় ৭টি ক্লাস্টারের আওতায় এসেছেন ৫১৮০ তাঁতশিল্পী। তাঁদের জন্য খরচ করা হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে প্রায় ৯ কোটি ৮৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। কাটোয়ায় ক্লাস্টারের আওতায় এসেছেন ১৩৬২ জন শিল্পী। অনুমোদিত ৩ কোটি ৫১ লক্ষ টাকার মধ্যে প্রায় ২ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলায় আরও ৯টি ক্লাস্টার চূড়ান্ত অনুমোদনের জায়গায় রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ এ দিন জানান, আরও কিছু ক্লাস্টারের আবেদন এই জেলা থেকে জমা পড়েছে। দফতরের আধিকারিকদের নথিপত্র খুঁটিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। মন্ত্রী জানান, জেলায় তাঁতসাথী প্রকল্পে ১৫ হাজার তাঁতিকে তাঁতযন্ত্র দেওয়া হয়েছে। বস্ত্র বিভাগের উদ্যোগে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা, শ্রীরামপুর ও ধাত্রীগ্রামে দু’টি হাট তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে এক ছাদের তলায় মিলবে তাঁতের সব কিছু। তাঁর দাবি, রাজ্যের সমস্ত তাঁতশিল্পীকে ক্লাস্টারের আওতায় আনাই সরকারের লক্ষ্য। সে জন্য সব জেলাতেই ক্লাস্টারের সুবিধা বোঝানো হবে। সোমবার শিবির হবে নবদ্বীপ ও শান্তিপুরে।

এ দিন অনুষ্ঠানে ছিলেন বস্ত্র দফতরের ডিরেক্টর দেবাশিস ঘোষ, ডেপুটি ডিরেক্টর সঞ্জয় রুইদাস, কালনার হ্যান্ডলুম অফিসার পলাশ পাল, জেলা পরিষদের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু পাল প্রমুখ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন