শিশু-বদলের ঘটনায় বেআব্রু হয়ে গিয়েছে হাসপাতালের পরিকাঠামো। আর যাতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা দেখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করার কথাও ভেবেছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। সুপার উৎপল দাঁয়ের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি বৃহস্পতি ও শুক্রবার দিনভর শিশু বিভাগের এসএনসিইউ-এ কর্মরত চিকিৎসক-নার্সদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিক ভাবে ওই কমিটির ধারণা, শিশু-বদলের ঘটনা অনিচ্ছাকৃত ভুল।
গত মঙ্গলবার মেমারির তক্তিপুরের আকাশী বেগম এসএনসিইউ থেকে সদ্যোজান কন্যা সন্তান বদলের অভিযোগ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্তে নেমে দেখেন অভিযোগ সত্যি। বুধবারই বীরভূমের ভোনাই গ্রামের এক দম্পতির কাছ থেকে সেই শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আপাতত দুটি শিশুই হাসপাতালে ভর্তি। ডিএনএ পরীক্ষার পরে তাদের পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। কী করে ‘ভুল’ হল খুঁজতে গিয়ে হাসপাতালের দাবি, এসএনসিইউ-এ ভর্তি সদ্যোজাত ও তার মায়েদের হাতে ‘টোকেন’ দেওয়া হয়। তাতে নম্বর থাকে। ওই নম্বর দেখেই মা ও সদ্যোজাতকে চিনতে পারেন কর্মরত নার্সরা। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ওই ‘টোকেন’ কোনও কারণে সদ্যোজাতর হাত থেকে খুলে গিয়ে বিপত্তি ডেকে আনে বলে তদন্ত কমিটির ধারণা। এ বার ওই টোকেনের বদলে ঘড়ির মতো অথচ নমনীয় হাতে বাঁধা যাবে এমন ‘ব্যান্ড’ সদ্যোজাতদের দেওয়া যায় কি না তার চিন্তাভাবনা করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর যদি কোনও কারণে ব্যান্ড খুলে যায় তাহলে তৎক্ষনাৎ মায়েদের হাতে সদ্যোজাতদের তুলে না দিয়ে নথিপত্র ও ওজন পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর ছাড়তে হবে। এ ছাড়াও সদ্যোজাতকে হাসপাতালে ছাড়ার আগে ওজন করে দেখা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। উৎপলবাবু বলেন, ‘‘তদন্ত রিপোর্ট সোমবার স্বাস্থ্য দফতরে জমা দেওয়া হবে।’’
কিন্তু প্রশ্ন হল, এসএনসিইউ-এ একটা ‘বেবি কটে’ সাধারণত এক জনের থাকার কথা। কিন্তু বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একটা বিছানায় তিন থেকে পাঁচ জন শিশুকে রাখা হয়। সে ক্ষেত্রে একসঙ্গে দু’জন সদ্যোজাতর টোকেন হাত থেকে খুলে না গেলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এ ক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছিল কি না দেখছে তদন্ত কমিটি।
ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু। দুটি ট্রাকের মুখোমুখি ধাক্কায় মৃত্যু হল এক ট্রাক চালকের। বৃহস্পতিবার ভোরে মেমারির সামুই সেতুর কাছে জি টি রোডে দুর্ঘটনাটি ঘটে। মৃতের নাম কামেশ্বর যাদব (২১)। বাড়ি বিহারের জামুই জেলার লক্ষ্মীপুরে। পুলিশ জানায়, এ দিন ভোরে কলকাতার দিক থেকে একটি খালি ট্রাক বীরভূমের ইলামবাজারের দিকে যাচ্ছিল। তখনই বর্ধমানের দিক থেকে আসা একটি বালিবোঝাই ট্রাকের সাথে সেটির মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় খালি ট্রাক চালক কামেশ্বরের। আহত হন অন্য ট্রাকের চালক ও খালাসি। তাঁদের মেমারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।