বছর দেড়েক আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে নানা দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন চাষিরা। এ বারও যাতে, তেমন অভিযোগ না ওঠে, সে জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ করছে পূর্ব বর্ধমান জেলা প্রশাসন। আগামী সপ্তাহ থেকেই ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র বিলি করা হবে বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা পরিষদের কৃষি বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার চাষিদের প্রায় মোট ১৫৪ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কৃষি দফতরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছরে মাস তিনেক আগে ব্যাপক ঝড়-জলে গোটা জেলায় ১ লাখ ছ’হাজার হেক্টর জমিতে ধান নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া ১৭৮৮ হেক্টর জমিতে পাট, ১৫০০ হেক্টর জমিতে আনাজ ও ১২০০ হেক্টর জমিতে তিল চাষে ক্ষতি হয়।
এ বার ক্ষতিপূরণ বিলিতে যাতে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ না ওঠে, সে জন্য বেশ কিছু ‘গাইডলাইন’ তৈরি করেছে জেলা প্রশাসন। ওই কমিটির সদস্য তথা জেলা পরিষদ সদস্য নুরুল হাসান বলেন, “চাষিরা প্রতি শতকে ৫০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ পাবেন। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ মিলবে ২৭ হাজার টাকা। এর জন্য কৃষি কর্মাধ্যক্ষের নেতৃত্বে একটি নজরদারি কমিটি গড়া হয়েছে।” ক্ষতিপূরণের জন্য চাষিরা ফর্ম পাবেন পঞ্চায়েত থেকে। এ ছাড়াও বিধায়ক, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের সদস্যরাও ফর্ম বিলি করতে পারবেন।
ক্ষতিপূরণের জন্য বিশেষ ভাবে খতিয়ে দেখা হবে জমির নথির উপরে। নথি হিসেবে চাষিদের জমির পরচা-সহ নানা প্রমাণপত্র দিতে হবে। ভাগচাষিদের জমির মালিকের ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ দিতে হবে। কোনও ক্ষেত্রে ভাগচাষি সেই শংসাপত্র না পেলে সংশ্লিষ্ট চাষি পঞ্চায়েতে আবেদন করতে পারবেন। পঞ্চায়েত বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবে। চাষিদের ‘ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে’ সরাসরি দেওয়া হবে টাকা।
শনিবার জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু ক্ষতিপূরণের এই সব ‘গাইডলাইন’ তৈরির জন্য কৃষি দফতরের সঙ্গে কথাও বলেছেন বলে দাবি। দেবুবাবু বলেন, ‘‘কোথাও দুর্নীতির অভিযোগ মিললেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমিও জেলা থেকে প্রতিটি ব্লকে নজরদারি চালাব।’’