West Bengal Municipal Election 2022

West Bengal Municipal Election Results 2022: মানুষের ভাবনা বদলাচ্ছে, দাবি সিপিএমের

শর্মিষ্ঠা বলেন, ‘‘বাবার কথা মনে পড়ছে। আজীবন বাম সমর্থক ছিলেন উনি। এলাকার সবাই মিলে আমার ওয়ার্ডে সন্ত্রাস রুখে দিয়েছিলেন।’’

Advertisement

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২২ ০৬:৫৪
Share:

শর্মিষ্ঠা নাগ সাহা। নিজস্ব চিত্র

গতবার দাঁইহাটে পুরবোর্ড গড়েছিল সিপিএম। গুসকরায় পাঁচটি, কালনায় ছ’টি আসন পেয়েছিল। মেমারিতেও দুই কাউন্সিলর ছিলেন সিপিএমের। এ বার তারা পেয়েছে শুধু কালনার একটি আসন। শহরের দু’নম্বর ওয়ার্ডে ১৮১ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন শর্মিষ্ঠা নাগ সাহা।

গত রবিবার, পুরভোটের দিন রাতে শর্মিষ্ঠার বাবা নিমাই সাহা হৃদরোগে মারা যান। এ দিন গণনাকেন্দ্রে আসেননি ওই প্রার্থী। সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ জয়ের খবর পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তিনি। শর্মিষ্ঠা বলেন, ‘‘বাবার কথা মনে পড়ছে। আজীবন বাম সমর্থক ছিলেন উনি। ওঁর অণুপ্রেরণাতেই ভোটে দাঁড়িয়েছি। এলাকার সবাই মিলে আমার ওয়ার্ডে সন্ত্রাস রুখে দিয়েছিলেন। অন্য ওয়ার্ডে সন্ত্রাস না হলে, ফল আরও ভাল হত।’’
গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেস এক সঙ্গে লড়েছিল। ১৬টি আসনেই হারে তারা। বেশির ভাগ জায়গাতেই প্রাপ্ত ভোটের হিসাবে সিপিএম নেমে আসে তৃতীয় স্থানে। সে দিক থেকে এই পুরভোট বামেদের কাছে ‘অস্তিত্ব রক্ষা’র লড়াই ছিল। মান যে রক্ষা হয়েছে, তা বলছেন সিপিএমের নেতারা। কালনার সিটু নেতা অরুণাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দু’নম্বর ওয়ার্ডে সন্ত্রাস প্রতিরোধ করা গিয়েছে। ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত কর্মীরা লড়েছিলেন। আগামী দিনে এই ওয়ার্ডকে মডেল করে দল এগিয়ে যাবে।’’ ভোটের ফলে দেখা যাচ্ছে, বর্ধমান শহরে ৮.২৫ শতাংশ ভোট পেয়েছে সিপিএম। মেমারিতে প্রাপ্ত ভোট ২২.০৭ শতাংশ। কালনায় ও গুসকরায় সিপিএম পেয়েছে ১২.৩৩ শতাংশ ও ১০.৮২ শতাংশ ভোট। চার জায়গাতেই বিজেপির থেকে এগিয়ে সিপিএম। কাটোয়াতেও ব্যবধান অল্প হলেও বিজেপির চেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিপিএম। প্রাপ্ত ভোট ৯.৮ শতাংশ। তবে দাঁইহাটে বিজেপির চেয়ে কিছুটা ভোট কম পেয়েছে সিপিএম। এখানে বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ১৯.৮৩ শতাংশ আর সিপিএম পেয়েছে ১৮.৮২ শতাংশ ভোট।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনুমান, বিধানসভা থেকেই বিজেপির ভোট তৃণমূলে ফিরেছে। কিছুটা ভাগ পেয়েছে বামফ্রণ্টও। আর সিপিএমের দাবি, তৃণমূলের ‘অন্তর্দ্বন্দ্ব চরমে ওঠা’, বিজেপির থেকে মানুষের ‘বিমুখ হওয়া’ আর ২০১১ সালের পরে ‘লাল দুর্গে’ বাম ভোটে যে ধস নেমেছিল, তা আটকানো গিয়েছে। দলের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের দাবি, “কালনার দু’নম্বর ওয়ার্ডে চার বার বুথ দখলের চেষ্টা হয়েছিল। মানুষ তা রুখে দিয়েছেন। তাতেই জয় এসেছে।’’ যদিও জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক খোকন দাস, জেলা যুব সভাপতি অলোক মাঝিদের দাবি, “সন্ত্রাসের গল্প শোনানো বন্ধ করুক সিপিএম। সন্ত্রাসই যেখানে হয়নি, সেখানে প্রতিরোধ কিসের?’’
আর গত পুরভোটের ফল ধরে রাখতে না পারার কারণ? সিপিএমের জেলা সম্পাদক বলেন, “বিধানসভা ভোটের আট-ন’মাসের মাথায় বিশাল পরিবর্তন হবে, এটা আশা করিনি। কিন্তু মানুষের ভাবনার পরিবর্তন হচ্ছে কি না, তার ইঙ্গিত পেতে চেয়েছিলাম। পরিবর্তন হচ্ছে, এটা স্পষ্ট হয়েছে। এতে লড়াই করার শক্তি মিলবে।’’ বিজেপি নেতা অভিজিৎ তায়ের দাবি, “ছাপ্পা ভোটে তৃণমূলের ইচ্ছা হয়েছে, তাই সিপিএমকে দ্বিতীয় করেছে। জনগণ নয়, তৃণমূলই রায় দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন