ভাগাভাগি: রাস্তার ডিভাইডারেও নতুন জেলার বার্তা। নিজস্ব চিত্র
পূর্বে কৃষি। শিল্প পশ্চিমে। আজ, শুক্রবার জেলা ভাগের আগে সাবেক বর্ধমানের অর্থনীতির সাধারণ ছবিটা ছিল এমনই।
জেলার রাজস্ব আদায়ের একটা বড় অংশই নির্ভর করত আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের উপরেই। জেলা ভাগের পরে পূর্ব বর্ধমানের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহলের আশা, নতুন জেলায় শিল্পোদ্যোগ এবং প্রস্তাবিত বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়নে গতি আসবে।
পূর্ব বর্ধমানের শিল্পপতিদের আশা, জেলা থেকে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে নতুন শিল্পস্থাপনে উদ্যোগী হবে রাজ্য সরকার। কালনার বাসিন্দা শিল্পপতি সুশীল মিত্রের কথায়, “শিল্পাঞ্চল থেকেই রাজস্বের একটা বড় পরিমাণ আসত। এ বার আমাদের নতুন জেলাতেও শিল্প আসবে।’’ কাটোয়ার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরির বিষয়েও দ্রুত পদক্ষেপ করবে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার। কাটোয়া মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির মুখপাত্র বিদ্যুৎ নন্দীর কথায়, “সাবেক বর্ধমানে গ্রামীণ ও শিল্প এলাকায় সমহারে উন্নয়ন হতো না। এ বার হয়তো সেই ছবিটা বদলাবে।”
জেলা ভাগের প্রাক্কালে পূর্ব বর্ধমান এলাকার ইটভাটা ও চালকলগুলির অবস্থা নিয়ে অবশ্য কিছু প্রশ্ন উঠেছে। কারণ সাবেক বর্ধমানে মোট ৮৩২টি ইটভাটার বেশির ভাগটাই রয়েছে কালনা-কাটোয়ায়। সেগুলিতে রানিগঞ্জ-আসানসোলের খনি অঞ্চল থেকে কয়লা আসে। জেলা ভাগের পরে ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি অসীম বৈরাগ্যের আশঙ্কা, ‘‘নতুন জেলা হওয়ার জন্য কয়লা আনতে গিয়ে প্রশাসনিক কোনও সমস্যা বাড়বে না তো?”
উল্টো দিকে, সাবেক বর্ধমানের মোট ৫৩২টি চালকলের বেশির ভাগটাই রয়েছে পূর্ব প্রান্তে। এগুলি থেকেই নানা সরকারি প্রকল্পে শিল্পাঞ্চলের জন্য চাল যেত। সাবেক বর্ধমান জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি দেবনাথ মণ্ডলের দাবি, ‘‘৯০ শতাংশ চালকল পূর্ব বর্ধমানেই থাকছে। ফলে ব্যবসার দিক থেকে ক্ষতি হবে না।” শুধু তাই নয়, নানা কারণে বন্ধ হওয়া কিছু চালকল ফের খোলার দাবিও জোরদার হবে বলে দাবি সমিতির কর্তাদের। ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ, প্রায় সকলেরই দাবি, ‘‘জেলা ভাগে গ্রামীণ বর্ধমানের
ভালই হয়েছে।’’
একই দাবি করে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস বলেন, “দু’প্রান্তের মানুষই খুব খুশি। তাঁদের দীর্ঘদিনের চাহিদা মুখ্যমন্ত্রী পূরণ করছেন।”