রিপোর্টে ভুল, তালা ঝুলল ক্লিনিকে

পুরুষ রোগীর পরীক্ষায় মহিলার রিপোর্ট দেওয়ায় অভিযুক্ত বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিল স্বাস্থ্য দফতর। তবে এই ঘটনার পরে দুর্গাপুরে শুধু ওই কেন্দ্র নয়, নানা ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই দায়সারা ভাবে কাজ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে রোগীর পরিজন ও চিকিৎসক মহলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৬ ০৬:১৯
Share:

পুরুষ রোগীর পরীক্ষায় মহিলার রিপোর্ট দেওয়ায় অভিযুক্ত বেসরকারি রোগনির্ণয় কেন্দ্র বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দিল স্বাস্থ্য দফতর। তবে এই ঘটনার পরে দুর্গাপুরে শুধু ওই কেন্দ্র নয়, নানা ডায়াগনস্টিক সেন্টারেই দায়সারা ভাবে কাজ ও অনিয়মের অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে রোগীর পরিজন ও চিকিৎসক মহলে।

Advertisement

দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি এক রোগীর ‘এনসিসিটি স্ক্যান অফ হোল অ্যাবডোমেন’ করানোর জন্য সোমবার দুর্গাপুরের অম্বুজা এলাকার ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়েছিলেন পরিজনেরা। মঙ্গলবার তার রিপোর্ট পেয়ে চিকিৎসককে দেখাতে যান তাঁরা। সেই রিপোর্টে জরায়ু, ডিম্বাশয়ের উল্লেখ দেখে অবাক হয়ে যান চিকিৎসক। এ নিয়ে টানাপড়েন চলার মাঝে সে দিন দুপুরেই হাসপাতালে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। সিএমওএইচের কাছে বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করেন রোগীর পরিজনেরা। এর পরেই রাতে ওই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।

রোগীর পরিজনেরা প্রশ্ন তুলেছেন, পুরুষ রোগীর পরীক্ষার রিপোর্টে ডিম্বাশয়, জরায়ুর কথা উল্লেখ করা হয়েছে দেখার পরেও কী ভাবে তাতে সই করলেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। অভিযোগ, শহরের বিভিন্ন ডায়াগনিস্টিক সেন্টার তাদের প্যাডে পাতার নীচে নির্দিষ্ট জায়গায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সই করিয়ে রাখা হয়। সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তা লিপিবদ্ধ করে দেন। পরে আর তা দেখানো হয় না চিকিৎসককে। তাই গোলমাল থাকলেও তা আর নজরে পড়ার উপায় থাকে না।

Advertisement

বুধবার হঠাৎ ওই সেন্টারে তালা দেখে বিপাকে পড়েন বেশ কয়েকজন রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিফোন সংস্থার প্রাক্তন কর্মী গোপালচন্দ্র শিট জানান, তাঁর ৭৫ বছর বয়সী মায়ের কিছু পরীক্ষার রিপোর্ট আনতে এসেছিলেন। এ দিন রিপোর্ট না পেয়ে ফেরার পথে তিনি বলেন, ‘‘হাতে অল্প সময়। এখন নতুন করে অন্য কোনও সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষা করাতে হবে।’’

এ ধরনের ঘটনা সামনে আসতেই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন শহরের চিকিৎসকদের একাংশ। দুর্গাপুরের বাসিন্দা তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (আইএমএ) প্রাক্তন রাজ্য সহ-সভাপতি মিহির নন্দীর ক্ষোভ, ‘‘মাঝেমধ্যেই দেখা যায়, বিভিন্ন ক্লিনিকের প্যাডে চিকিৎসকেরা আগেভাগে সই করে রাখছেন। পরে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীরা রিপোর্ট লিপিবদ্ধ করে তা রোগীর হাতে তুলে দেন। এই প্রবণতা বেআইনি।’’ বর্ধমানের সিএমওএইচ প্রণবকুমার রায় জানান, অভিযোগ ওঠা ক্লিনিকটি বন্ধ করে তদন্ত শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন