ছেলেধরা সন্দেহে ‘মারের’ পরে ছেলেকে ঘরে আটক

সন্ধ্যাদেবী জানান, দিন দুয়েক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। সোমবার বনকাটির বসুধায় ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয় এক যুবককে। সন্ধ্যাদেবী জানান, তিনি জানতে পারেন তাঁর ছেলেই প্রহৃত হয়েছে।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

ছেলেধরা সন্দেহে মারধরের পরপর ঘটনায় চিন্তায় পড়েছে পুলিশ-প্রশাসন। চিন্তায় পড়েছেন এক মা-ও। মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলেকে ছেলেধরা সন্দেহে এক দিন রাস্তায় মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। আতঙ্কে তাই এখন ঘরে যুবক ছেলেকে পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে আটকে রাখছেন তিনি।

Advertisement

কাঁকসার ত্রিলোকচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের ক্যানালপাড় এলাকায় মাটির ঘুপচি বাড়ি বিধবা সন্ধ্যা লোহারের। ত্রিপল ঢাকা খড়ের চাল। অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। এ ছাড়া বিধবা ভাতা পান। দু’বেলা দু’মুঠো ভাতের সংস্থান করতেই দিন কেটে যায় তাঁর। তিনি জানান, ছেলে বহু দিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝে-মাঝেই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়। খোঁজাখুঁজি করে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে হয়।

সন্ধ্যাদেবী জানান, দিন দুয়েক আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। সোমবার বনকাটির বসুধায় ছেলেধরা সন্দেহে মারধর করা হয় এক যুবককে। সন্ধ্যাদেবী জানান, তিনি জানতে পারেন তাঁর ছেলেই প্রহৃত হয়েছে। কাঁদতে-কাঁদতে থানায় গিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন। তার পর থেকে পায়ে দড়ি বেঁধে ঘরে আটকে রেখেছেন ছেলেকে। সন্ধ্যাদেবী বলেন, ‘‘বড় বিপদে পড়েছি। আমি সারা দিন কাজের জন্য বাইরে থাকি। কে দেখবে ছেলেকে? তাই বেঁধে রেখেছি।’’ বাড়িতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ঘরে পায়ে নারকেলের দড়ি বাঁধা অবস্থায় বসে আপন মনে কথা বলে চলেছেন ওই যুবক। কখনও শুয়ে পড়ছেন মেঝেয়। পায়ে আলগা করে দড়ি বাঁধা। সন্ধ্যাদেবী জানান, পায়ে দড়ি থাকলেই ছেলে আর বেরোনোর চেষ্টা করে না।

Advertisement

ঘটনার কথা শুনেছেন কাঁকসার বিডিও সুদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘খুব বেদনাদায়ক ব্যাপার। ছেলেধরা সন্দেহে মারধর ও গুজব আটকাতে নানা ভাবে সচেতনতা প্রচার চলছে। তা সত্ত্বেও একের পর এক ঘটনা ঘটে চলেছে।’’ তিনি জানান, মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ, পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠকে কী ভাবে এই প্রবণতা বন্ধ করা যায় সে নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন