অবসরের বয়স কমিয়ে দেওয়ায় বুধবার হিন্দুস্তান কেব্লস কারখানার রূপনারায়ণপুর ইউনিটে বিক্ষোভ দেখালেন শ্রমিক-কর্মীরা। তাঁদের দাবি, কারখানার অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে কর্তৃপক্ষকে আলোচনা করে এ বিষয়ে সন্তোষজনক সমাধান বের করতে হবে। যতক্ষণ না তা হচ্ছে, বিক্ষোভ চলবে বলে দাবি করেছে সংস্থার চারটি শ্রমিক সংগঠন। তবে গত শনিবার রাতে অবসরের বয়স সংক্রান্ত এই নোটিস ঝুলিয়ে দেওয়ার পরে উচ্চপদস্থ কর্তাদের আর কারখানায় দেখা যায়নি। তা নিয়েও অসন্তুষ্ট শ্রমিক-কর্মীরা।
কেব্লস কারখানার রূপনারায়ণপুর ইউনিটের কর্মীদের অবসরের বয়স ৬০ থেকে কমিয়ে ৫৮ করার কথা নোটিস দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তার পর থেকেই শ্রমিক-কর্মীদের একাংশের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়। কিন্তু সোমবার থেকেই কারখানায় কোনও আধিকারিক না আসায় তাঁরা কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে অসন্তোষের কথা জানাতে পারেননি। বুধবার সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু হয়। নেতৃত্ব দেন কারখানা অনুমোদিত চারটি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। এ দিন সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনিক ভবনের সামনে কয়েকশো শ্রমিক-কর্মী জড়ো হয়েছেন। আইএনটিইউসি-র সম্পাদক উমেশ ঝা-র বক্তব্য, “আমরা এই একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যৌথ আন্দোলন শুরু করেছি।” সিটুর সম্পাদক মধু ঘোষ, এআইটিইউসি-র সহ-সভাপতি নয়ন গোস্বামীরা দাবি করেন, নোটিস ঝোলানোর পরে উচ্চপদস্থ কর্তারা কেউ আসছেন না। তাই তাঁদের দাবিও জানাতে পারছেন না। লাগাতার আন্দোলন চলবে। এইচএমএসের সম্পাদক বিরোজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবার অভিযোগ, “কারখানার কর্তারা আসছেন না মানে তাঁরা আমাদের গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। এর পরে আমরা শ্রম কমিশনারের দ্বারস্থ হব।”
শ্রমিক-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার সংস্থার আইন বিষয়ক দফতরের এক অফিসার প্রশাসনিক ভবনে এসেছিলেন। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনের কর্মী-সদস্যেরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখানোয় তিনি ফিরে যান। কয়েক জন কর্মীর দাবি, বিক্ষোভের মুখে পড়ার ভয়েই কর্তারা দফতরে আসছেন না বলে জেনেছেন তাঁরা। তবে কেব্লসের এই ইউনিটের দুই কর্তা বাসুদেব দে ও কুণাল রায়কে বারবার ফোন করা হলেও তাঁরা ধরেননি।
প্রতি দিন কারখানায় শ্রমিক-বিক্ষোভ ও আধিকারিকদের অনুপস্থিতিতে চিন্তিত কর্মীদের একাংশ। তাঁদের মতে, এই ঘটনার জেরে সংস্থার কর্পোরেট বিভাগের কাছে বার্তা যেতে পারে, রূপনারায়ণপুর ইউনিটে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। তাতে কারখানার অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া বিঘ্নিত হতে পারে। এমনিতেই বছর দশেক ধরে কারখানায় উত্পাদন নেই। সময় মতো বেতন পাচ্ছেন না শ্রমিক-কর্মীরা। এই অবস্থায় নিজেদের পাওনাগন্ডা বুঝে অধিগ্রহণ পর্ব নির্বিঘ্নে মেটানোর ব্যবস্থা হোক, চাইছেন তাঁরা।