মতানৈক্য হলে নিজেদের মধ্যে কোন্দল নয়, আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নিতে হবেদলের নেতা-কর্মীদের এমনই বার্তা দিলেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা।
বর্ধমানের মেমারির সভায় পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ওয়েবকুপার’ সভায় আর এক মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, কোলাঘাটের ভোগপুরে সভায় শুভেন্দু অধিকারীরবিবার দলের নেতা-কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়ানোর পরামর্শ দিলেন তিন তৃণমূল নেতাই। দিলেন এমন এক সময়ে, যখন জেলায় জেলায় বিক্ষুব্ধেরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। প্রকাশ্য সভায় নেতা-কর্মীরা দলের অন্য অংশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলছেন।
এ দিন মেমারির বিটরা গ্রামের সভায় সুব্রতবাবু কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “দলে যদি কোনও অসুবিধা হয়, কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার সামনে এসে যায়, তা আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে নেব। কেউ চুরি করলে আমাদের বলুন, অত্যাচার করলে আমাদের বলুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে শাস্তি দেবেন।” তিনি যখন এ কথা বলছেন, তখন সেই মঞ্চেই হাজির ছিলেন পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। দিন কয়েক আগে দলের একাংশের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ এনে তপনবাবু ধমক খেয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। সুব্রতবাবুর মন্তব্য নিয়ে তিনি অবশ্য কিছু বলতে চাননি।
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি তিন কর্মীর বদলি নিয়ে বিবাদে বিজ্ঞান বিভাগের এক সচিবকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের কর্মচারী ইউনিয়নের বিরুদ্ধে। এ দিন সেখানে ‘ওয়েবকুপা’র সভায় স্বপন দেবনাথ বলেন, “আমার কাছে খবর আছে, কর্মী সংগঠনগুলি নিজেদের স্বার্থে কাজ করছে। কর্মীদের কাছে অনুরোধ, দ্বন্দ্বে জড়াবেন না। যদি মতানৈক্য হয়, নিজেরা আলোচনা করে মেটান।”
অনেকটা একই সুর শোনা গিয়েছে তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর বক্তৃতাতেও। পূর্ব মেদিনীপুরেও তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল নতুন কিছু নয়। সম্প্রতি তোলাবাজির অভিযোগ নিয়ে তরজায় জড়ানোয় কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও দলের জেলা কার্যকরী সভাপতি অখিল গিরিকে ‘সংযত’ হওয়ার নির্দেশ দেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ দিন ভোগপুর বাজারে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও স্থানীয় নেতাদের উদ্দেশে শুভেন্দুবাবু বলেন, “দয়া করে উপদলের ফাঁদে পা দেবেন না। কথায় কথায় ‘আমি আমি’ করা ছাড়তে হবে, বলবেন ‘আমরা’ করেছি।”