আলু নেয়নি হিমঘর, চাষিদের অবরোধে বিপাকে পর্যটকেরা

বিপুল ফলনের জেরে খোলা বাজারে দাম পড়তে শুরু করায় নানা জেলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল আগেই। এ বার হিমঘরের বিরুদ্ধে আলু না নেওয়ার অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করলেন চাষিরা। রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের গুসকরায় এই অবরোধের জেরে দুর্ভোগে পড়লেন বহু যাত্রী। সকাল থেকে লাইন দেওয়া সত্ত্বেও হিমঘর কর্তৃপক্ষ আলু নিচ্ছেন না, এই অভিযোগে গুসকরার দিঘা গ্রামে বোলপুর-বর্ধমান রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন ওই চাষিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০২:২৩
Share:

বিপুল ফলনের জেরে খোলা বাজারে দাম পড়তে শুরু করায় নানা জেলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল আগেই। এ বার হিমঘরের বিরুদ্ধে আলু না নেওয়ার অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করলেন চাষিরা। রবিবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের গুসকরায় এই অবরোধের জেরে দুর্ভোগে পড়লেন বহু যাত্রী।

Advertisement

সকাল থেকে লাইন দেওয়া সত্ত্বেও হিমঘর কর্তৃপক্ষ আলু নিচ্ছেন না, এই অভিযোগে গুসকরার দিঘা গ্রামে বোলপুর-বর্ধমান রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন ওই চাষিরা। রাস্তার উপরে আলুর বস্তা বোঝাই ট্রাক্টর, ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকায় গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তায় যাতায়াতে সমস্যা হয় দিনভর। অবরোধের জেরে তা ভয়াবহ আকার নেয়। বোলপুর থেকে ফেরার পথে আটকে পড়েন বহু পর্যটক। তাঁদেরই এক জন কলকাতার গোপাল পোদ্দার বলেন, “এমন সমস্যায় পড়ব, ভাবিনি!” ঘণ্টা দুয়েক পরে চাষিদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে অবরোধ তোলে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গুসকরার ওই এলাকায় দু’টি হিমঘর রয়েছে, যার মধ্যে একটি সমবায়ের ভিত্তিতে চলে। গুসকরার পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায় বলেন, “এ বার আলুর প্রচুর ফলন হওয়ায় সমবায় হিমঘরটির কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেন, আগে শেয়ার হোল্ডারদের আলু রাখা হবে। তার পরে জায়গা থাকলে অন্য চাষিদের কাছ থেকে আলু নেওয়া হবে। সেই হিমঘর ভর্তি হয়ে যাওয়ায় অন্যটির উপরে চাপ পড়েছে।” স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল থেকে আলুর বস্তা বোঝাই বহু গাড়ি হিমঘরের সামনে লাইন দেয়। চাষিদের অভিযোগ, দুপুরে হঠাৎ আলু নেওয়া বন্ধ করে দেন হিমঘর কর্তৃপক্ষ। তখনও সেখানে প্রায় দু’শো ট্রাক্টর দাঁড়িয়ে। বারবার অনুরোধ করা হলেও কানে তোলেননি হিমঘর কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ক্ষুব্ধ চাষিরা অবরোধ শুরু করেন।

Advertisement

ভাতারের চাষি রামপ্রসাদ ঘোষ, বিশ্বজিৎ চৌধুরী, আউশগ্রামের শেখ গিয়াসউদ্দিনদের ক্ষোভ, “একশো-দেড়শো বস্তা করে আলু নিয়ে এসে সকাল থেকে লাইন দিয়েছি। আজ না নিলে হয়রান হতে হবে। অনুরোধেও কাজ না হওয়ায় অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি।” রাত ৮টা নাগাদ গুসকরা থানার পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে। হিমঘর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, শ্রমিক কম থাকায় এমনিতেই সমস্যা ছিল। তবু ধীরে-সুস্থে আলু নেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু চাষিরা দ্রুত কাজ করার দাবি তোলেন। বিকেলে ক্লান্ত শ্রমিকেরাও বেঁকে বসেন। তাই এ দিন আর কোনও আলু নেওয়া যায়নি।

এর মাঝে পড়ে চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহালেন বহু যাত্রী। বোলপুর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন বর্ধমানের অমর দাস, মেমারির কমল সামন্তেরা। তাঁদের প্রশ্ন, “হিমঘরের সঙ্গে চাষিদের ঝামেলায় আমাদের কেন ভুগতে হবে? প্রশাসন কেন তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা নিল না?” পুলিশের অবশ্য দাবি, অবরোধের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন