দুর্গাপুরে উড়ালপুল।—নিজস্ব চিত্র।
উড়ালপুল তৈরির ফলে যানজট কমেছে, কিন্তু বেড়েছে দুর্ঘটনা। ফুটপাথ ও আলো নেই বলে এই পরিস্থিতি দুর্গাপুর স্টেশন থেকে এক কিলোমিটার দূরের উড়ালপুলটির, অভিযোগ শহরবাসীর।
অথচ, এই পুলের রাস্তাটি দিয়েই বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, মেদিনীপুর-সহ ওড়িশা ও দক্ষিণ ভারতগামী বাস, ট্রাকগুলি যায়। প্রসঙ্গত, সেতুটি তৈরি হওয়ার আগে রেললাইনের উপর দিয়ে যাওয়া পুরনো রাস্তাটিই ব্যবহার হত। কিন্তু এর ফলে দুর্গাপুরের পূর্ব রেল গেটে তৈরি হত ব্যাপক যানজট। ঘণ্টাখানেক আটকে পড়ত পণ্যবাহী গাড়িগুলি। রাস্তাটিকে যানজট মুক্ত করতেই ২০০৭ সালে তৎকালীন বাম সরকার ও রেলের যৌথ উদ্যোগে শুরু হয় উড়ালপুল তৈরির কাজ। উড়ালপুলের রাস্তা তৈরির কাজ করে রেল এবং ব্রিজে ওঠার রাস্তা তৈরি করে রাজ্য পূর্ত দফতর। ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে ব্রিজটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উদ্বোধনে রেল কর্তৃপক্ষ ডাক না পাওয়ায় তৎকালীন রেলমন্ত্রক ব্রিজটির ফের উদ্বোধন করা হবে বলে জানানো হয়।
কিন্তু উড়ালপুলটি উদ্বোধন হওয়ার পর বাসিন্দারা দেখেন, কোনও ফুটপাথ তৈরি করা হয়নি। গাড়ি চালাতে গিয়েও দেখা যায়, বাঁক নেওয়ার সময়ে উপযুক্ত জায়গা মিলছে না। আবার উড়ালপুলটি চালু হওয়ার সাথে সাথে রেল লাইনের উপর দিয়ে যে পুরনো রাস্তাটি ছিল, সেটিও বন্ধ করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন পথচারী থেকে সাইকেল ও মোটরবাইক আরোহী সবাই। বাঁকুড়ার বড়জোড়ার বাসিন্দা পরেশ ঘড়ুই জানান, প্রতিদিনই দুর্গাপুরের স্টেশন বাজারে ব্যবসার কাজে আসতে হয়। কিন্তু মোটরবাইক নিয়ে সেতুর উপরে উঠলেই মনে হয় দুর্ঘটনা ঘটবে। সামনে গাড়ি এলে সরার জায়গা পাওয়া যায় না। বাস চালক প্রভাত মণ্ডল বলেন, “সামনে কোনও গাড়ি এলে বাস দাঁড় করিয়ে দিতে হয়।”
যদিও সেতু উদ্বোধন হওয়ার পরেই বাসিন্দারা ফুটপাথ তৈরি এবং পুরনো রাস্তাটি চালুর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। শুধু তাই নয়, এই সেতুতে আলোর কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে রাতের দিকে পথচারীদের যাতায়াতের অসুবিধা হয়। যদিও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে উড়ালপুলের রাস্তায় দ্রুত আলোর ব্যবস্থা করা হবে। ফুটপাথ প্রসঙ্গে দুর্গাপুর হাইওয়ে সাব-ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নাজির আহমেদ বলেন, “প্ল্যানের মধ্যে ফুটপাথের অনুমোদন ছিল না। তাই তা তৈরি হয়নি।”