তৃণমূল ছাত্র পরিষদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও দলবিরোধী কাজ করার অভিযোগে ইউনিট ভেঙে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দিনভর সরগরম থাকল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। প্রসঙ্গত মাস খানেক আগে টিএমসিপির ইউনিট সভাপতি দীপক পাত্রের নেতৃত্বে নিয়মিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ও উপাচার্যের বাংলোয় লাগাতার বিক্ষোভ, আন্দোলনের কথা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়নি বলেই সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে।
এ দিন টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিট ভেঙে দেওয়ার কথা উপাচার্য ও ছাত্র সংসদের দফতরে চিঠি দিয়ে জানান। অশোকবাবুর দাবি, “দিন কয়েক ধরেই রাজ্য নেতৃত্বকে না জানিয়ে ইউনিট সভাপতি দীপক পাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি পেশ ইত্যাদি কর্মসূচি নিচ্ছিল। আমরা সেই খবর পেয়েছি। তার প্রমাণও মিলেছে। তারপরেই শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির জরুরী বৈঠকে বর্তমান কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাত দিনের মধ্যেই আমরা নতুন কমিটি ঘোষণা করব।” কমিটি ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেতা আমিরুল ইসলাম ও প্রদীপ বাজপেয়ীদের দাবি, “গত বছর সন্তু ঘোষের নেতৃত্বে ইউনিট ঠিকভাবেই চলছিল। কিন্তু দীপক পাত্র ওই পদে এসেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে বহিরাগতদের নিয়ে এসে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিতে শুরু করে।” ওই কর্মসূচিগুলি গ্রহণে বিশ্বিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের অনুমোদন ছিল না বলেও প্রদীপবাবুদের দাবি।
যদিও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা দলবিরোধী কাজের অভিযোগ মানতে নারাজ দীপকবাবু। তাঁর দাবি, “কমিটি ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে আমি কোনও চিঠি পাইনি। দলবিরোধী কোনও কাজও করিনি। কয়েকটি আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে থেকে নৈতিক দায়িত্ব পালন করেছিলাম।” নতুন কমিটি গঠনের কাজ শুরু হওয়ার আগেই কী ভাবে পুরনো কমিটি ভেঙে দেওয়া যায়, সে বিষয়েও সন্দিহান দীপকবাবু।
অন্য দিকে ছাত্রীদের কটূক্তি করাকে কেন্দ্র করে এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি চত্বরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা ও হাতাহাতি হয়। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভাপতি প্রদীপ বাজপেয়ী প্রহৃত হয়েছেন বলে দাবি করা হয় টিএমসিপি-র এক গোষ্ঠীর তরফে। বিরোধী গোষ্ঠীকে তোপ দেগে প্রদীপবাবুর দাবি, “দুপুরে বাংলা ও রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের কয়েকজন ছাত্রী রাজবাটি অফিসে এসেছিলেন। একদল বহিরাগত তাঁদের অশালীন উক্তি করলে আমি বাধা দিই। তারপরেই ওরা আমার উপর চড়াও হয়।” যদিও প্রদীপবাবু অসত্য বলছেন অভিযোগ করে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতা শেখ সুখচাঁদের পাল্টা বলেন, “প্রদীপ ছাত্র সংসদের প্রভাব খাটিয়ে আমাদের সঙ্গের ছাত্রীদের কটূক্তি করেন। আমরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছি।”