এনটিপিসি কাটোয়ায় বিদ্যুত্কেন্দ্র তৈরির কাজ পিছিয়ে দেওয়ার ঘোষণা করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন প্রকল্পের জন্য জমি দিতে ইচ্ছুক চাষিরা। তা কাটাতে গ্রামে গিয়ে সংস্থার কর্তারা জানিয়ে দিলেন, জমি কেনা হবেই। নির্মাণকাজ পিছনোর সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
১০ জানুয়ারি কাটোয়ায় এসে এনটিপিসি চেয়ারম্যান অরূপ রায়চৌধুরী জানান, কয়লার জোগানের ব্যবস্থা না হওয়ায় কেন্দ্রীয় পরিবেশ দফতরের ছাড়পত্র জোগাড় হচ্ছে না। তাই নির্মাণের কাজ বেশ কয়েক মাস পিছিয়ে দিতে হচ্ছে। এই কথা শুনেই জমি বিক্রি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন চাষিরা। এঁদের বেশির ভাগই ইতিমধ্যে জমি বিক্রির ব্যাপারে লিখিত সম্মতি দিয়েছেন। এনটিপিসি পিছিয়ে গেলে বিক্ষোভের পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর।
পরিস্থিতি বুঝে শনিবার এনটিপিসি (কাটোয়া)-র জেনারেল ম্যানেজার অভিজিত্ সেন প্রকল্প এলাকা লাগোয়া চুড়পুনি গ্রামে যান। সঙ্গে ছিলেন সংস্থার কর্তা অশোক চট্টোপাধ্যায়, রজতশুভ্র বসু, ভি পি সাউরা। এলাকার এক বাসিন্দার বাড়িতে চাষিদের মুখোমুখি হয়ে তাঁরা জানান, যে সব কারণে নির্মাণের কাজ আটকে যাচ্ছে, তার সঙ্গে জমি নেওয়ার সম্পর্ক নেই। প্রতিশ্রুতির মতই এনটিপিসি চাষিদের থেকে জমি কিনবে। অভিজিত্বাবু জানান, চাষিদের থেকে চুক্তিপত্র যত তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে, তত দ্রুত জমি কেনার প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
কাটোয়ায় এই তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য এর আগে বাম আমলে ৫৫০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। তৃণমূল ক্ষমতায় এসেই জমি অধিগ্রহণ না করার নীতি নেওয়ায় প্রকল্প থমকে যায়। এনটিপিসি জানায়, আরও প্রায় আড়াইশো একর হাতে না পেলে তারা ৬৬০ মেগাওয়েটের দুই ইউনিটের বিদ্যুত্কেন্দ্র গড়তে পারবে না। জট কাটাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের নানা দফতরের হাতে থাকা ১০০ একর জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। বাকি প্রায় দেড়শো একর জমি কিনতে মাঠে নামে এনটিপিসি। সিংহভাগ জমির জন্য সম্মতিপত্রও নেওয়া হয়ে গিয়েছে।
অভিজিত্বাবুরা চাষিদের বলেন, “কাটোয়ায় প্রকল্প হবেই। আপনারা চুক্তিপত্রে সই করে দিন। আমরা তা সংস্থার পরিচালন পর্ষদের সভায় পেশ করব।” সংস্থা সূত্রের খবর, প্রায় ৮০০ চাষি ওই দেড়শো একর জমির মালিক। এর মধ্যে ৬০ জন চুক্তিপত্রে সই করেছেন। তাঁদের হাতে থাকা জমির পরিমাণ প্রায় ২৩ একর।