টাউন হলে চলছে সম্মেলন। —নিজস্ব চিত্র।
কংগ্রেসকে সঙ্গে নিয়ে এ রাজ্যে ধর্মনিরপেক্ষে জোট তৈরির ইঙ্গিত দিলেন আরএসপি-র রাজ্য সম্পাদক ক্ষিতি গোস্বামী।
রবিবার বর্ধমানের টাউন হলে দলের জেলা কমিটির ১৫তম সম্মেলনের উদ্বোধনে এসে তিনি বলেন, “রাজনীতিতে স্থায়ী শত্রু বা মিত্র বলে কিছু হয় না। কংগ্রেসের সঙ্গে বামপন্থীদের ধর্মনিরপেক্ষ জোট হতেই পারে। সিপিআই তো এখনই বলছে কংগ্রেসকে জোটে নিয়ে নিতে। আমাদের দলের ভেতরেও এ নিয়ে আলাপ আলোচনা চলছে। বামফ্রন্টেও এই নিয়ে চর্চা হচ্ছে।”
এ দিন আরএসপি-র জেলা কমিটিতে সদস্য সংখ্যা না বাড়লেও সাত নতুন মুখ দেখা গিয়েছে। আরএসপি-র বর্তমান জেলা সম্পাদক স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আগের কমিটির চার জন মারা গিয়েছেন। দু’জন বয়সের কারণে সদস্য পদ থেকে সরে গিয়েছেন। আর প্রাক্তন জেলা সম্পাদক অঞ্জন মুখোপাধ্যায় বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁদের জায়গাতেই এই নতুন সাত জনকে নেওয়া হয়েছে।
সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে আরএসপি কবুল করে নিয়েছে যে শাসকদলের দুর্বলতাকে ঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে সাধারণ মানুষকে দলে টানতে পারেনি তারা। বলা হয়েছে, “রাজ্যে শাসকদলের কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবর্ক্ষেত্রে ব্যর্থতা সত্ত্বেও আমরা জণগনকে সেই অর্থে আমাদের পক্ষে আনতে পারিনি।” দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন কারা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, “আমাদের তৃণমূলের সার্বিক ব্যর্থতার বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারছি না তৃণমূলের অত্যাচারে। স্থানীয় কোনও সমস্যা নিয়ে বামপন্থী কর্মীরা রাস্তায় বের হলেই তৃণমূলের লোকেরা মারছে। আমরা তাঁদের নিরাপত্তাও দিতে পারছি না। পুলিশও আমাদের বিরুদ্ধে।” সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে দলের প্রধান দুর্বলতা হিসেবে দেখা হয়েছে গণসংগঠনগুলির নেতৃত্বের সাথে বিচ্ছিন্নতাকে।
এ দিনের সম্মেলনে শাসকদলের শৃঙ্খলা নেই বলেও কড়া সমালোচনা করেন ক্ষিতিবাবু। তিনি বলেন, “যে কোনওদিন তৃণমূল ভেঙে যেতে পারে। মকুলবাবু তো প্রতিদিনই রাজ্যের এখানে ওখানে তাঁর দলের সুপ্রিমোর বিরুদ্ধে বলছেন। খেউর চলছে। ওই দলে শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। ওঁদের নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কেরা বিধানসভায় নিয়মিত আসেন না। রাজ্যে কোনও সমস্যা নিয়ে আলোচনায় কোনও উত্তরই পাওয়া যায় না।” পরিষদীয় ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ার অভিযোগ তুলে রাজ্যপাল ও রাষ্ট্রপতির কাছে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে বলেও তাঁর দাবি।