তৈরিই সার, ভেঙেচুরে পড়ে পুরসভার সমষ্টি শৌচাগার

পুরসভা শৌচাগার তৈরি করেছে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ করেনি। কোথাও দরজা ভাঙা, কোথাও জমে রয়েছে আবর্জনা। বুধবার, বিশ্ব শৌচাগার দিবসে দুর্গাপুর পুরসভার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে এই ধরা পড়ল এই ছবি। ৪৩ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত দুর্গাপুর পুরসভায় মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম ও বস্তি এলাকা। এই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকের বাড়িতেই নিজস্ব শৌচাগার নেই।

Advertisement

বিপ্লব ভট্টাচার্য

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১২
Share:

দেখভালের অভাবে পড়ে।—নিজস্ব চিত্র।

পুরসভা শৌচাগার তৈরি করেছে। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ করেনি। কোথাও দরজা ভাঙা, কোথাও জমে রয়েছে আবর্জনা। বুধবার, বিশ্ব শৌচাগার দিবসে দুর্গাপুর পুরসভার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে এই ধরা পড়ল এই ছবি।

Advertisement

৪৩ টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত দুর্গাপুর পুরসভায় মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি গ্রাম ও বস্তি এলাকা। এই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকের বাড়িতেই নিজস্ব শৌচাগার নেই। সমস্যা মেটাতে সরকারি উদ্যোগে কয়েকটি জায়গায় সমষ্টি শৌচাগার তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেই শৌচাগারগুলির বেশির ভাগই এখন ব্যবহারের অযোগ্য। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে এখনও অবধি দুর্গাপুরের পুর এলাকায় ৮৪টি শৌচাগার তৈরির প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। খরচ ধরা হয়েছে ৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে কয়েকটি শৌচাগার তৈরি হয়ে গেলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কাজ চলছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা শৌচাগার নির্মাণ করলেও মানুষকে সচেতন করে না। ফলে অর্থ খরচ হলেও অনেক ক্ষেত্রেই কাজের কাজ হয় না। তাঁদের আরও অভিযোগ, তৈরি করার পর সমষ্টি শৌচাগারগুলির দেখভালই করা হয় না।

অভিযোগের যে সারবত্তা রয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে তার প্রমাণ মিলেছে। বস্তি এলাকাগুলি ঘুরে দেখা গিয়েছে বেশির ভাগ সমষ্টি শৌচাগারই বন্ধ। দেখা মিলেছে দরজাবিহীন শৌচাগার। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত নবীনপল্লির বাসিন্দারা জানালেন, আগে এখানে ৫টি সমষ্টি শৌচাগার ছিল। তার মধ্যে ৩টি পুরোপুরি বন্ধ। বর্তমানে টিকে রয়েছে ২টি। তার মধ্যে একটির অবস্থাও বেশ খারাপ। এলাকার বাসিন্দা শেখ সেলিমের দাবি, “এলাকায় শ’পাঁচেক পরিবার বাস করেন। খুব কম জনের বাড়িতেই নিজস্ব শৌচাগার রয়েছে। সমষ্টি শৌচাগারের অবস্থাও খারাপ হওয়ায় অনেকে বাধ্য হয়ে খোলা মাঠে প্রাতঃকৃত্য করতে যান।” পাশের নজরুলপল্লির বাসিন্দা মঞ্জু মাইতি, উত্তর সিকদারদের আবার অভিযোগ, সমষ্টি শৌচাগারগুলিতে জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। ফলে ইচ্ছে থাকলেও সেগুলি ব্যবহার করতে পারা যায় না।

Advertisement

শুধু শৌচাগার তৈরি করে, শৌচাগার দিবসের দিন অনুষ্ঠান করলে মূল সমস্যার সমাধ্যা হবে না বলে দাবি করেছেন পুর এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও গণ সংগঠনের কর্মীরা। তাঁদের পরামর্শ, পথনাটক ও গানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে শৌচাগার ব্যবহারের বিষয়ে সচেতন করতে হবে। সমষ্টি শৌচাগারগুলি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মানুষকে সচেতন করার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।” যেখানে শৌচাগারগুলি ব্যবহারের অনুপোযোগী সেগুলি সংস্কার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন