মালডাঙা-মেমারি রাস্তায় চলছে অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।
ফের চুরির ঘটনা ঘটল মন্তেশ্বরে। এ বার থানা থেকে কিছুটা দূরেই। পরে সকালে লাগাতার চুরির ঘটনায় জেরবার বাসিন্দারা রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। পরে পুলিশ ও বিডিও-র আশ্বাসে ঘণ্টা দুয়েক পরে বিক্ষোভ ওঠে।
মাস তিনেক ধরেই মন্তেশ্বরে একের পর এক চুরি চলছে। কখনও কনেযাত্রী বোঝাই গাড়ি আটকে, কখনও মন্দিরের তালা ভেঙে মূর্তি, সোনা-রুপোর গয়না, বাসনপত্র চুরি করে পালাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। চুরি হয়েছে একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানেও। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশের কাছে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়েছে। তবু কাউকে গ্রেফতার তো দূর, কোনও ঘটনারই কিনারা করতে পারে নি পুলিশ।
বুধবার রাতেও একটি ট্রাক্টর থেকে আস্ত ট্রলিটি খুলে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সারা দিন নানা কাজের পরে থানার কাছেই সুবীর ঘোষ তাঁর ট্রাক্টর রেখে দেন। বুধবারও তিনি রাস্তার পাশে ট্রলিসমেত ট্রাক্টরটি রেখে দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে ট্রাক্টরের চালক গাড়িতে জল দিতে গিয়ে দেখেন ইঞ্জিনের অংশ পড়ে থাকলেও ট্রলিটি নেই। ঘটনার কথা চাউর হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ। মন্তেশ্বর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সকাল ন’টা থেকে পথ অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। অবরোধকারীদের দাবি, একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ হলেও পুলিশ না উদ্ধার করতে পারছে চোরাই মাল, না কাউকে গ্রেফতার করছে। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের সক্রিয়তার অভাবেই দুষ্কৃতীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অবরোধকারীদের এক জন রতন ঘোষ বলেন, “লাগাতার চুরির ঘটনায় বাড়িতে বাড়িতে আতঙ্ক নেমে এসেছে। ঘুমোতে যাওয়ার আগে শুধু মনে হয় এ বার নিজের সর্বনাশ হবে না তো।” আর এক জন চিন্ময় মণ্ডল বলেন, “দুষ্কৃতীরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে গিয়েছে যে থানার পাশ থেকেও চুরি করতে দ্বিধা করছে না। এমন পরিস্থিতি আগে কখনও দেখিনি।” এসডিপিও এবং কালনার মহকুমাশাসককে ঘটনাস্থলে আসার দাবি তোলেন তাঁরা। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারেরও প্রতিশ্রুতি চান। ঘণ্টা দুয়েক ধরে অবরোধ চলে। শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে পৌঁছন মন্তেশ্বরের বিডিও এবং ওসি অঞ্জন রায়। পুলিশের তরফে এক জন গ্রেফতার হওয়া এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ কিছু নাম মিলেছে জানানোর পরে অবরোধ ওঠে। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপার ও প্রশাসনের কর্তাদের কাছেও গণ অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।