দুপুর হতেই সুনসান শহর, বাড়ছে লোডশেডিং

বেলা একটু গড়াতে না গড়াতেই রাস্তাঘাট সুনসান। যে দু’চারটে লোক দেখা যাচ্ছে তাঁদেরও চেনার জো নেই। মাথা, মুখ ঢেকে হনহনিয়ে চলেছেন তাঁরা। শেষ জৈষ্ঠ্যের দুপুরে বর্ধমান শহরের ছবিটা এমনই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৪ ০১:১৬
Share:

বেলা একটু গড়াতে না গড়াতেই রাস্তাঘাট সুনসান। যে দু’চারটে লোক দেখা যাচ্ছে তাঁদেরও চেনার জো নেই। মাথা, মুখ ঢেকে হনহনিয়ে চলেছেন তাঁরা। শেষ জৈষ্ঠ্যের দুপুরে বর্ধমান শহরের ছবিটা এমনই।

Advertisement

বুধবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানান, জেলার নানা অংশে তাপমাত্র ৪২ থেকে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। প্রতি ব্লকের বিডিওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁর এলাকায় পানীয় জলের পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি যেন প্রতি ২৪ ঘন্টা অন্তর খোঁজ নেন। পানীয় জলের অভাব কোথাও দেখা দিলে সঙ্গে-সঙ্গে তা প্রশাসনকে জানানোর কথাও বলা হয়েছে। প্রশাসন জরুরি ভিত্তিতে সেই এলাকায় পানীয় জল পৌঁছোনোর ব্যবস্থা করবে।

এ দিকে গরম বাড়তেই শহরে ঘন ঘন লোডশেডিং শুরু হয়েছে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দুপুরে-রাতে একাধিকবার বেশ কিছুক্ষণের জন্য বিদ্যুত থাকছে না। কোনও কোনও সময় তো বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্যও লোডশেজিং চলছে। রাজ্য বিদ্যুত্‌ সরবরাহ নিগম লিমিটেডের তরফে বলা হয়েছে, রায়নায় একটি ৩১.৫ এমভিএ ট্রান্সফর্মারের বদলে একটি ৫০ এমভিএ ট্রান্সফর্মার বসানোর কাজ চলছে। সেই কারণে বর্ধমান শহরের বিদ্যুত্‌ সরবরাহ কিছুটা ব্যহত হয়েছে। তবে এই সমস্যা বেশিদিন চলবে না বলেও আশ্বাস দিয়েছে তারা।

Advertisement

জনজীবনের পাশাপাশি প্রবল গরমে নেতিয়ে পড়ছে খেতে থাকা সব্জিও। চাষিদের দাবি, শাকসব্জি এতটাই শুকিয়ে যাচ্ছে যে জল ঢেলেও লাভ হচ্ছে না। আর নেতিয়ে যাওয়া সব্জির দামও সেভাবে মিলছে না। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচন্ড তাপে জলস্তর নেমে যাচ্ছে। রাত ও দিনের তাপমাত্রার মধ্যে তেমন ব্যবধান না থাকায় গাছের বাষ্পমোচন ঠিক ভাবে হচ্ছে না। ফলে গাছ ঝিমিয়ে পড়ছে। ক্ষতি হচ্ছে সব্জিরও। তাঁদের আশঙ্কা, এই গরমে মৌমাছি, প্রজাপতি সেভাবে না আসায় পরাগ সংযোগেও বাধা পড়ছে। ফলে ক্ষতি হতে পারে সূর্যমুখী জাতীয় বিকল্প চাষে।

এ দিকে তীব্র গরমে শিশুদের সুস্থ রাখতে কালনা মহকুমা হাসপাতালও কুলার ও বড় বৈদুতিন ফ্যান কেনার পরিকল্পনা নিয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিশু বিভাগে যে ফ্যান রয়েছে তাতে এই গরমে বিশেষ কাজ হচ্ছে না। হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা কালনার মহকুমাশাসক সব্যসাচী ঘোষ জানান, আপাতত দুটি কুলার ও চারটি বড় ফ্যান কেনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। রোগী কল্যাণ সমিতির তরফেই অর্থ বরাদ্দ করা হবে। গরমে দু’দিনের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কালনা আদালতের আইনজীবীরা। বুধবার দুপুরে বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা একটি বৈঠক করে বৃহস্পতি ও শুক্রবার কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন। কালনা বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য পার্থসারথী কর জানান, তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে তাতে আদালতে এসে সাধারণ মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটা মাথায় রেখেই কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার ফের কাজে যোগ দেবেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement