তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের প্রধান, তাঁর স্বামী ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন দলীয় ৬ সদস্য। বৃহস্পতিবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের কাছে আউশগ্রামের ভেদিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই সদস্যরা অভিযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান রূপা মাঝি, তাঁর স্বামী তুফান মাঝি ও উপপ্রধান আব্দুল আলিম অর্থ তছরুপে জড়িত।
ওই সদস্যদের অভিযোগ, টেন্ডার না ডেকে ও কোনও রকম আলোচনা ছাড়াই ২ লক্ষ টাকায় একটি কালভার্ট তৈরি করা হয়। পঞ্চায়েত ভবন রঙ করার জন্য ১ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা ধার্য করা হলেও বিলে খরচের পরিমাণ আরও বেশি দেখানো হয়েছে। ওই সদস্যদের আরও অভিযোগ, ১০০ দিনের কাজের কোনও নোটিশ বোর্ড তৈরি না করা হলেও তার খরচ দেখানো হয়েছে। জেলাশাসকের কাছে করা ওই অভিযোগ পত্রে আরও বলা হয়েছে, প্রায় ৪০০ বাসিন্দা শৌচাগার তৈরির জন্য ৯০০ টাকা করে মোট ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জমা দেন। কিন্তু ওই টাকা বছর দেড়েক ধরে পঞ্চায়েতে জমা না দিয়ে প্রধান ও তাঁর স্বামী নিজেদের হেফাজতে রেখে দিয়েছেন। কোনও শৌচাগারও তৈরি হয়নি। ওই টাকার কোনও হিসেবও নেই বলে দাবি হামিদা বেগম, চায়না সাহা, জনতা নাগ, সাফা বিবি, সনৎ মাঝি ও বনমালি ধারা নামে ওই ৬ পঞ্চায়েত সদস্যের।
১৭ সদস্যের ওই পঞ্চায়েতে ৩ জন সিপিএম সদস্য বাদে বাকি সবাই তৃণমূলের। তৃণমূলের ১৪ জন সদস্যের মধ্যে প্রায় আট-ন’জন এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব বলে ওই ৬ সদস্যের দাবি। প্রয়োজনে প্রধান ও উপপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাও আনা হবে বলে জানান অভিযোগকারী সদস্যরা। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে উপ-প্রধান আব্দুল আলিমের দাবি, “সব কাজ নিয়ম মেনেই হয়েছে। যে কোনও পঞ্চায়েতের সদস্য কাজের হিসেবও দেখতে পারেন।” প্রধানের স্বামী তথা স্থানীয় তৃণমূল নেতা তুফান মাঝিরও দাবি, “পঞ্চায়েতে ঢুকে ভাঙচুর ও বিভিন্ন অবৈধ কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে দল এলাকার ৪ নেতাকে বহিস্কার করেছে। তারা এবং দলের কিছু লোক মিলে গোলমাল পাকাচ্ছে। শৌচাগারের সমস্ত টাকাই গ্রাম পঞ্চায়েতে জমা পড়েছে।”
জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের আশ্বাস, “অভিযোগের তদন্ত করা হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”