পুরভবনের সামনে পুলিশের নজরদারি।—নিজস্ব চিত্র।
তাঁর ঘরে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে ১১জনের নামে এফআইআর করলেন পুরপ্রধান স্বরূপ দত্ত। বুধবার রাতে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত দু’জনের নাম পার্থপ্রতীম নস্কর ও প্রদীপ মণ্ডল। তাদের বাড়ি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মহন্তস্থল ও রাধাগোবিন্দ পল্লি এলাকায়। বাকি ৯ অভিযুক্তও ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা।
বুধবার অনিয়মের অভিযোগে কাজ কেড়ে নেওয়ায় দলেরই এক কাউন্সিলর শঙ্করী ঘোষের সঙ্গে গণ্ডগোল বেধেছিল পুরপ্রধানের। খবর পেয়ে ওই কাউন্সিলরের ওয়ার্ডের (২৫ নম্বর) লোকেরা পুরপ্রধানের ঘরে ঢুকে টিভি ভাঙচুর, কাগজপত্র তছনছ করেছিলেন বলেও অভিযোগ। যদিও কর্তব্যে গাফিলতির কথা অস্বীকার করেছিলেন শঙ্করীদেবী। তাঁর দাবি ছিল, পুরপ্রধান কথার প্রতিবাদ করায় তিনি তাঁকে অপমান করেন। এরপরেই রাতে অভিযোগ দায়ের করেন স্বরূপবাবু।
বৃহস্পতিবার দুপুরেও এ নিয়ে উত্তেজনা দেখা যায় পুরসভা চত্বরে। কয়েকজন কাউন্সিলরের দাবি, পুরপ্রধান থানায় খবর দিয়ে পুলিশ ডাকেন। ঘটনাস্থলে গিয়েও দেখা যায়, পুরভবনের গেটে বন্দুকধারী পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুরপ্রধানের বিরোধী গোষ্ঠীর কয়েকজন কাউন্সিলর, যেমন, শেখ বসিরুদ্দিন ওরফে বাদশা, মহম্মদ সেলিম ও সেলিম খাঁ বলেন, “পুরপ্রধান ভয় পেয়ে পুলিশ ডেকেছেন। উনি আমাদের অভিভাবক। ওঁর সঙ্গে কারও মতের অমিল হতেই পারে। উনি সব কাউন্সিলরদের ডেকে বোর্ড মিটিংয়ে বিরোধের মিমাংসাও করতে পারেন। কিন্তু তা না করে উনি পুলিশ ডাকছেন। এতে পুরসভার সম্মান নষ্ট হচ্ছে।” আর এক কাউন্সিলর মহম্মদ সেলিমের দাবি, “আমি পুরসভা থেকে বের হওয়ার সময়ে বহিরাগত এক ব্যক্তি পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে আলটপকা মন্তব্য করেন। তার জেরেই বচসা বাধে। তখনকার মতো পরিস্থিতি শান্তও হয়ে যায়।” তাঁর অভিযোগ, “কারও পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ থাকতেই পারে। তিনি লিখিত অভিযোগও জানাতে পারেন। কিন্তু তার সুরাহা না করে খারাপ মন্তব্য করে উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। আমার সন্দেহ, চেয়ারম্যানের পরামর্শেই উত্তজনা ছড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের অবশ্য দাবি, “আমি সোয়া একটা নাগাদ বাড়ি চলে আসি। পুরসভায় ফিরি সাড়ে তিনটে নাগাদ। আমি তো পুলিশ দেখিনি।” পরে বিকেল চারটে নাগাদও পুরভবনের সামনে পুলিশ ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে জানানোয় তিনি বলেন, “আমি আমার ঘরে ছিলাম। পুলিশ কোথায় ছিল দেখতে পাইনি। পুলিশকে ডাকিওনি। নতুন করে কোনও ঘটনা ঘটেছে বলেও জানিনা।”
পুলিশ কেন পুরভবনে গিয়েছিল জানতে চাইলে বর্ধমান থানার আইসি আব্দুল গফ্ফর বলেন, “গতকালের ঘটনার প্রেক্ষিতেই পুলিশ পুরসভায় গিয়েছিল। নতুন করে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি না তৈরি হয় সেটা দেখাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য। আমাদের কেউ পুরসভায় ডাকেননি।”