পরপর ছুটল গুলি, ভিড় রাস্তায় নিহত দুই যুবক

দুষ্কৃতীদের দুই গোষ্ঠীর রেষারেষিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই যুবকের। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ পূর্বস্থলীর লক্ষ্মীপুর স্টেশন চত্বরে ভিড়ের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের নাম ভণ্ডুল ঘোষ (৪০) ও সাধু রাজবংশী (৩৮)।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০১৪ ০০:৫৪
Share:

দুষ্কৃতীদের দুই গোষ্ঠীর রেষারেষিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল দুই যুবকের। বুধবার সকাল ১১টা নাগাদ পূর্বস্থলীর লক্ষ্মীপুর স্টেশন চত্বরে ভিড়ের মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। মৃতদের নাম ভণ্ডুল ঘোষ (৪০) ও সাধু রাজবংশী (৩৮)। দু’জনের বাড়িই ওই গ্রামে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন নবদ্বীপ থেকে ট্রেনে এসে লক্ষ্মীপুর ষ্টেশনে নামে ওই দু’জন। স্টেশনের কাছেই একটা গ্যারাজ থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য মোটরবাইক বের করতে যান। তখনই একদল দুষ্কৃতী তাঁদের লক্ষ্য করে একটানা এলোপাথারি গুলি ছুড়তে শুরু করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ভন্ডুল ও সাধুর।

দিনের কর্মব্যস্ততার মধ্যে আচমকা চোখের সামনে গুলিবর্ষণে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। দ্রুত দোকানের ঝাঁপ পড়তে থাকে। তারমধ্যেই পালিয়ে যায় ওই দুষ্কৃতীরা। পরে একটা নাগাদ পুলিশ এসে দেহদুটি নিয়ে যায়। পুলিশের দাবি, মৃত দু’জনের নামেই খুন ও নানা দুষ্কর্মের অভিযোগ রয়েছে। দুষ্কৃতীদের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বে এই খুন বলেই পুলিশের অনুমান।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই লক্ষ্মীপুর এলাকায় দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব রয়েছে। এলাকা দখল, তোলাবাজি নিয়ে প্রায়ই তাদের রেষারেষি চলে। সপ্তাহ দু’য়েক আগের এক সকালে লক্ষ্মীপুর বাজারে হ্যাপি মল্লিক নামে এক যুবক খুন হয়। প্রকাশ্য দিবালোকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে পরপর গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়েছিল হ্যাপির শরীর। পুলিশ জানিয়েছিল, হ্যাপির নামে একাধিক অপরাধমূলক কাজের অভিযোগ ছিল। দুষ্কৃতীদের একটি গোষ্ঠীরও ঘনিষ্ঠ ছিল সে।

এলাকায় হ্যাপির বিরুদ্ধ গোষ্ঠী হিসাবে পরিচিত মোরশেদ শেখের গোষ্ঠী। সাধু এবং ভণ্ডুল ওই গোষ্ঠীর লোক বলেই পরিচিত। ২০১০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর একটি খেলার মাঠকে ঘিরে লক্ষ্মীপুর ঘোষপাড়া এবং আলুনির মাঠ এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল। গুলি ও বোমাবাজিতে প্রাণ হারিয়েছিল চার যুবক। সেই সময় দুষ্কৃতীদের একটি দল ভাড়া করে এনে এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর অভিযোগ ছিল ভন্ডুলের বিরুদ্ধে। পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ও জানান, দুষ্কৃতীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই খুনের ঘটনাটি ঘটেছে।

তবে দু’টি খুনের দিনেই পুলিশের অন্যত্র ব্যস্ত থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। হ্যাপি খুনের দিনে ক্রাইম কনফারেন্সে জেলা সদরে ব্যস্ত ছিল মহকুমা পুলিশ। আবার এ দিনও মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফরে নানা জায়গায় মোতায়েন ছিল বেশিরভাগ পুলিশ। প্রশ্ন উঠছে, অপরাধীরা কী পুলিশের অন্য কাজে ব্যস্ত থাকার সুযোগটাই নিচ্ছে। কালনার এসডিপিও ইন্দ্রজিত্‌ সরকার জানান, বিষয়টি নিয়ে ভাবনায় রয়েছেন তাঁরাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন