ফোনে ডেবিট কার্ডের তথ্য জেনে ফের প্রতারণা

প্রথমে রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নাম করে ফোন, তার পর কথা প্রসঙ্গে ডেবিট কার্ড ও পিন নম্বর জেনে ফেলা। কিছুক্ষণ পর থেকেই এটিএম থেকে হাপিস টাকা। ঝাঁঝরা কোলিয়ারির দুই আধিকারিক এমনই প্রতারণার শিকার হলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানা গিয়েছে, ঝাঁঝড়া এমআইসি’র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার চন্দ্রভূষণ ঝা-র কাছে বুধবার সকালে রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের নাম করে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১২
Share:

প্রথমে রাস্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের নাম করে ফোন, তার পর কথা প্রসঙ্গে ডেবিট কার্ড ও পিন নম্বর জেনে ফেলা। কিছুক্ষণ পর থেকেই এটিএম থেকে হাপিস টাকা। ঝাঁঝরা কোলিয়ারির দুই আধিকারিক এমনই প্রতারণার শিকার হলেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

পুলিশ জানা গিয়েছে, ঝাঁঝড়া এমআইসি’র ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার চন্দ্রভূষণ ঝা-র কাছে বুধবার সকালে রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের নাম করে একটি অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। ওই ব্যাঙ্কের লাউদোহা শাখায় চন্দ্রভূষণবাবুর আমানত রয়েছে। তাঁর কাছে প্রথমে ডেবিট কার্ডের পিন নম্বরটি জানাতে বলা হয়। বলা হয়, “আপনার ডেবিট কার্ডটি ‘লক’ হয়ে গিয়েছে।” প্রথমে চন্দ্রনাথবাবু তিনি পিন নম্বর দিতে না চাইলে বলা হয়, “আপনি নিজেও লক খুলে নিতে পারবেন। তবে সে ক্ষেত্রে পিন নম্বরের সঙ্গে বিশেষ একটি নম্বর যোগ করে তা থেকে বিশেষ আর এক সংখ্যা বাদ দিতে হবে।” এ ভাবে বেশ খানিক ক্ষণ কথা বলে পিনটি জেনে নেয় ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিটি। ফোন কেটে দেওয়ার আগে তাঁকে মোবাইল ফোনটি আধঘন্টার জন্য বন্ধ রাখতে বলা হয়। চন্দ্রভূষণবাবু জানান, আধঘন্টা পরে তিনি মোবাইল চালু করে এসএমএস-এর মাধ্যমে জানতে পারেন, আমানত থেকে ধাপে ধাপে ৩৬ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। একই ভাবে ওই কোলিয়ারির ম্যানেজার অজিতকুমার সিংহের আমানত থেকেও ৪৮ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

তবে এই ধরণের অভিযোগ দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে নতুন নয়। শিল্পাঞ্চলে আগেও এই ধরণের ঘটনা বার বার ঘটছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ওই রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কেরই সিটি সেন্টার শাখার এক আমানতকারী ও দক্ষিণবঙ্গ রাস্ট্রীয় পরিবহন সংস্থার কর্মী শুভ্র চোঙদারের অ্যাকাউন্ট থেকে এভাবেই ২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়। সেই সময় ডেবিট কার্ডের সময়সীমা শেষদিকে হওয়ায় পুনর্নবীকরণ করতে হবে বলে এটিএম নম্বর ও পিন জানতে চাওয়া হয় শুভ্রবাবুর কাছে। দিন কয়েক বাদে ফের একই ভাবে ফোন করে শুভ্রবাবুর কাছে বাড়ির বাকিদের ডেবিট কার্ড নম্বর ও পিন জানতে চাওয়া হয়। সেবার অবশ্য আর ন্মবর দেন নি শুভ্রবাবু। চলতি বছরের অগস্ট মাসে একইভাবে অমরাবতী এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি কারখানার কর্মী মধুসূদন নায়েকের আমানত থেকে অনলাইন শপিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ৪১ হাজার টাকা সরিয়ে ফেলা হয়।

Advertisement

বুধবার ব্যাঙ্ক ধর্মঘট থাকায় চন্দ্রভূষণবাবু ও অজিতবাবু পুরো বিষয়টি ব্যাঙ্কে জানাতে পারেননি। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কে বিষয়টি জানানো হলে ব্যাঙ্কের তরফে দু’টি আমানতই বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই দুই গ্রাহক। পুলিশ জানিয়েছে, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগের তদন্ত করা হবে। ওই রাস্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক জানান, এই ধরণের প্রতারণা চক্রের পাল্লায় পড়ে বহু গ্রাহক সর্বস্ব হারাচ্ছেন। ব্যাঙ্কের তরফে গ্রাহকদের মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে সাবধান করা হয়, যাতে গোপন তথ্য যাতে কাউকে না দেন। ব্যাঙ্ক ও এটিএম কাউন্টারেও লিখিতভাবে গ্রাহকদের বিষয়টি জানানোর ব্যবস্থা করা হয়। ওই আধিকারিকের আক্ষেপ, “এত কিছুর পরেও গ্রাহকরা বারবার ভুল করছেন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন