কেবল চোরেদের দাপটে বিপাকে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিফোন পরিষেবা সংস্থা বিএসএনএল। দুর্গাপুরের মেনগেট এলাকায় ঘন-ঘন কেবল চুরির ফলে ব্যাহত হচ্ছে লাগোয়া দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কাজকর্ম। মুশকিলে পড়ছেন গ্রাহকেরা। বিএসএনএলের তরফে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে পুলিশকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ নম্বর জাতীয় সড়কের মেনগেট এলাকায় দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা রয়েছে। যার একটি আবার ওই ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক প্রধান শাখা। অন্য ব্যাঙ্কের শাখাটিতেও গ্রাহকের ভিড় থাকে প্রচুর। বিএসএনএলের কেবল লাইনের মাধ্যমে ওই দুই ব্যাঙ্কের যাবতীয় অনলাইন কাজকর্ম হয়। বিএসএনএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর প্রথম চোরেরা কেবল কেটে নেয়। খোঁজ নিয়ে দফতরের কর্মীরা দেখেন, ডিএসপি-র প্রশাসনিক ভবনের পিছন দিকে বেশ কিছুটা অংশের কেবল কেটে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এর ফলে পরপর দু’দিন দু’টি ব্যাঙ্কেই কাজকর্ম বন্ধ থাকে। গ্রাহকেরা ছাড়াও বিপাকে পড়ে বহু সংস্থা। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত একটি ব্যাঙ্কের কর্মীরা গাড়ি ভাড়া করে অন্ডালে গিয়ে এবং অন্য ব্যাঙ্কের কর্মীরা সংস্থার এ-জোন শাখায় গিয়ে জরুরি কাজকর্মগুলি সারেন। ব্যাঙ্কের এক কর্মী বলেন, “অন্য শাখার নিজস্ব কাজ আছে। তার উপরে আমরা গিয়ে হাজির হওয়ায় সেখানকার কাজকর্মে খানিকটা হলেও ব্যাঘাত ঘটেছে।”
বিএসএনএলের এক আধিকারিক জানান, কোনও রকমে কেবল জুড়ে লাইন চালু করা হয়। কিন্তু, গত শুক্রবার দুপুরে আবার জাতীয় সড়কের পাশে নর্দমার ভিতর দিয়ে যাওয়া কেবল কেটে নেয় দুষ্কৃতীরা। ফলে, ফের সংযোগ ছিন্ন হয়ে যায়। সে দিনও আগের মতো ব্যাঙ্ক দু’টির কর্মীরা কেউ সংস্থার সিটি সেন্টার শাখায়, কেউ বেনাচিতি শাখায় গিয়ে জরুরি কাজকর্ম সারতে বাধ্য হন। শনিবার দুপুর ১২টা নাগাদ কেবল ফের জুড়ে দেওয়া হলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাঙ্কের কয়েক জন কর্মী বলেন, “কখন যে আবার সংযোগ ছিন্ন হয়ে যাবে, তা ভেবে আতঙ্কে ভুগছি। পুজোর আগে বারবার এমন হলে গ্রাহকদের ভীষণ অসুবিধা হবে। সেই ক্ষোভ সামাল দিতে হিমসিম হতে হবে আমাদের।”
বিএসএনএলের এক আধিকারিক জানান, তাঁরা পুলিশের কাছে সমস্যার কথা জানিয়েছেন। তিনিও বলেন, “দুষ্কৃতীদের বাড়বাড়ন্ত রোধ না করতে পারলে পরিষেবা বিঘ্নিত হবে।” পুলিশ জানায়, তারের প্লাস্টিকের ঢাকা সরিয়ে ধাতব তামা বের করে নেয় দুষ্কৃতীরা। ওয়ারিয়া ফাঁড়ি ও আশপাশের এলাকায় তেমন কোনও কাজকর্ম চলছে কি না, তা খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় টহলদারি বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়েছে। পুলিশের আশ্বাস, দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলা হবে।