তাদের দলে যোগ দিতে চেয়ে গ্রামের কয়েক জন কর্মিবৈঠক করার পরেই হামলা চালিয়েছে তৃণমূলঅভিযোগ করল বিজেপি।
আউশগ্রামের মালোচা পাড়ায় সোমবার রাতে বিজেপি-র বৈঠক সেরে ফেরার পথে কয়েক জনের উপরে বোমা-পিস্তল নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন এক যুবক। সালাম শেখ নামে ওই যুবকের পায়ে তিনটি গুলি লেগেছে বলে মঙ্গলবার বিজেপি-র জেলা সভাপতি দেবীপ্রসাদ মল্লিক দাবি করেন। তাঁর দাবি, “তৃণমূল ছেড়ে দলে-দলে লোক বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন। আর তাতেই তৃণমূলের রোষে পড়েছি আমরা। নানা জায়গায় আমাদের উপরে হামলা হচ্ছে। অন্তত ৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। আউশগ্রামের মালোচার ঘটনা তারই একটি উদাহরণ।”
সালাম শেখের বাবা নিয়ামত শেখ ঘটনার পরে আউশগ্রাম থানায় জনা ১১ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকের নামে হামলার অভিযোগ দায়ের করেছেন। আউশগ্রাম থানার তরফে জানানো হয়েছে, অভিযোগে নাম থাকা এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। তবে পুলিশের দাবি, ঘটনাস্থলে ছর্রা চালানো হয়েছিল। সালামের পায়ে তারই তিনটি টুকরো ঢুকেছে। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। আপাতত তিনি বিপদমুক্ত।
পুলিশের কাছে অভিযোগে নিয়ামত জানান, মালোচার ২ নম্বর গ্রাম সংসদ এলাকায় দীর্ঘদিনে ধরে তৃণমূলের অত্যাচার চলছিল। গ্রামের মানুষকে ১০০ দিনের কাজ-সহ পঞ্চায়েতের নানা প্রকল্পের সুযোগ নিতে দেওয়া হচ্ছিল না। সোমবার এর প্রতিবাদে গ্রামের অনেকে দলবদ্ধ ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। স্থানীয় দুই বিজেপি নেতা সনাতন মাজি ও মনোজ চক্রবর্তীকে নিয়ে গ্রামের এক জনের বাড়িতে একটি কর্মিবৈঠক হয় সোমবার। এই বৈঠক সেরে মালোচার মোল্লাপাড়ার রাস্তা দিয়ে ফেরার সময়ে গ্রামের কয়েক জন আক্রান্ত হন। তৃণমূলের লোকেরা তাঁদের উপর বোমা, পিস্তল, লাঠি, দা নিয়ে হামলা চালায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজেপি-র উত্তর রামনগরের পঞ্চায়েত সদস্যকেও প্রচণ্ড মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তখনই দুষ্কৃতীরা গুলি চালালে সালাম জখম হন। হামলাকারীরা প্রায় ৬টি মোটরবাইক ভাঙচুর ও প্রায় ৮টি মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে।
জেলা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, মালোচার যে লোকেরা বিজেপি-তে যাবে বলে বৈঠক করেছিল তারা আসলে সিপিএম করেন। তাই এক সঙ্গে অনেকের বিজেপি-তে যাচ্ছেন শুনে তৃণমূলের লোকেরা জানতে আসেন, দলবদলের কারণ কী। এর পরেই দু’পক্ষের মধ্যে বচসা ও পরে মারপিট বাধে। জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা অবশ্য বলেন, “হামলাকারীরা সংখ্যায় ছিল দু’জন। তাঁদের মধ্যে খোদাবক্স মণ্ডল নামে এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যে যুবকের গোড়ালিতে গুলি লেগেছিল তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা চঞ্চল গড়াই অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দাবি করেন, “ওই হামলায় আমাদের কেউ জড়িত নয়। দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে এলাকার সমস্যা নিয়ে মারপিট চলার সময়ে এক জন আচমকা গুলি চালিয়েছে।”