ধস কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ফেরার পথে বিজেপি-র আসানসোল জেলা সভাপতি নির্মল কর্মকারকে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল নেতা তথা আসানসোল পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি দলবল নিয়ে তাঁকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ নির্মলবাবুর।
গত কয়েক মাসে রাজ্যের নানা প্রান্তে বিজেপি নেতা-কর্মীদের উপরে হামলার অভিযোগ উঠছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। বিশেষ করে লাগোয়া জেলা বীরভূমে। এ বার দলের এক জেলা সভাপতি আক্রান্ত হওয়ায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের প্রতিক্রিয়া, “চতুর্দিকে বিজেপি-র যে উত্থান হচ্ছে, তাতে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল। শেষ দিকে বামফ্রন্টের যে সব লক্ষণ দেখা দিয়েছিল, সেই কুকথা বলা বা বিরোধীদের উপরে হামলা, সেগুলি এখন তৃণমূলের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। শীঘ্রই ওদের বামফ্রন্টের মতো অবস্থা হবে।” আসানসোলের বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, “জিতেন্দ্রবাবু বেশ বাড়াবাড়ি করছেন। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে আমরা কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছি। অপরাধীদের ধরতে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিয়েছি।”
আসানসোলের কালিপাহাড়ি এলাকায় বুধবার ধসে কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সে দিন এলাকায় গিয়ে পুনর্বাসনের ব্যাপারে আশ্বাস দেন জিতেন্দ্রবাবু। স্থানীয় সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্মলবাবুরা এলাকায় গিয়ে এত দিনেও পুনর্বাসন কেন হল না, সে প্রশ্ন তোলেন। তা পৌঁছয় তৃণমূল নেতাদের কানে।
নির্মলবাবুর অভিযোগ, “ফেরার পথে জিতেন্দ্রবাবু-সহ কয়েক জন আমার গাড়ি আটকান। আমাকে গাড়ি থেকে টেনে নামিয়ে মারধর শুরু করেন ওঁরা। কোনও রকমে গাড়িতে উঠে পালিয়ে আসি।” আসানসোল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন তিনি। থানার সামনে বিজেপি কর্মীরা কিছুক্ষণ পথ অবরোধও করেন।
জিতেন্দ্রবাবুর বিরুদ্ধে এর আগেও নেতা-কর্মীদের হেনস্থার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। তাঁর মদতেই বাবুল সুপ্রিয়ের বিরুদ্ধে মদ্যপ অবস্থায় ভোটের প্রচারে যাওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল বলে বিজেপি-র দাবি। পরে সেই অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়। এ দিন অবশ্য জিতেন্দ্রবাবু মারধরের কথা মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “আমরা এই সব কাজ করি না। কালিপাহাড়ির মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু এই ব্যাপারটি নিয়ে যাঁরা সস্তা রাজনীতি করছেন, ঠিক করছেন না।”
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) কার্যকরী সভাপতি ভি শিবদাসনের দাবি, “শুনেছি, বিজেপি নেতারা ওখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নামে কটূক্তি করছিলেন। তখন স্থানীয় মানুষজন প্রতিবাদ করেছেন। আমাদের কেউ এর সঙ্গে যুক্ত নন।”