বরাদ্দ বেতনের চেয়ে বেশি টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার ৪৮ ঘণ্টা পরেও বারাবনির অভিযুক্ত প্রধান করণিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক কী ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা জানতে চেয়ে ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক কারণ দর্শানোর নোটিসও পাঠিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে জড়িতদের কড়া শাস্তি চেয়েছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি।
আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক সুরপতি প্রধান জানান, তাঁর দফতরের এক করণিক প্রথম এই বেনিয়মটি ধরেন। দেখা যায়, ওই স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য বরাদ্দ বেতনের চেয়ে অনেক বেশি টাকার বিল জমা পড়েছে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এই বেশি বিল শুধুমাত্র স্কুলের প্রধান করণিকের ক্ষেত্রে বাড়ানো হয়েছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অমিতাভ রায় দাবি করেন, তাঁর সই জাল করে এই বিল তৈরি করেছেন করণিক নরেন্দ্রনাথ হাজরা। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি প্রশ্ন তুলেছে, গত চার মাস ধরে লাগাতার বেনিয়ম হয়েছে। অথচ, স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানতেই পারলেন না, এটা দুর্ভাগ্যজনক। সংগঠনের বর্ধমান জেলা সভাপতি নিমাই মহন্ত বলেন, “এ ক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন না।”
অমিতাভবাবুর অবশ্য দাবি, “আমি ওই করণিককে বিশ্বাস করেছিলাম। তিনি আমার সই জাল করে এই কাজ করেছেন।” সে ক্ষেত্রে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার ৪৮ ঘণ্টা পরেও থানায় অভিযোগ করা হল না কেন? অমিতাভবাবু বলেন, “স্কুলের পরিচালন সমিতির সভা ডাকা হয়েছে। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হে।। সেই মতো ব্যবস্থা নেব।”
এ দিকে স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও রকম ব্যবস্থা না নেওয়ায় অসন্তুষ্ট আসানসোলের অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক। তিনি বলেন, “আমরা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোিসে পাঠিয়ে তিন দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছি, তাঁরা ওই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন।” ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অমিতাভবাবু আবার এই বেনিয়মের জন্য অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরকেই পাল্টা দুষেছেন। এ দিন তাঁর প্রশ্ন, “চার মাস ধরে এই বেনিয়ম চলছে, তা কেন ওই দফতর আগে ধরতে পারল না?” এ বিষয়ে অবশ্য অতিরিক্ত জেলা স্কুল পরিদর্শক কোনও মন্তব্য করেননি।